নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবীতে মানিকছড়িতে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও পূর্বক ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট
মানিকছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি জেলা ব্যাপি বিদ্যুতের ধারাবাহিক লোডশেডিং এর নামে গ্রাহক হয়রানীর প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৬টা-১২টা পর্যন্ত সকল দোকান-পাট বন্ধ ও বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও এবং স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচী পালন করছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এর আগের দিন রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৮ টায় মানিকছড়ি বাজারস্থ জেনারেল রেস্টুরেন্ট চত্বরে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। তাৎক্ষণিক আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম, সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রুপেন পাল।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন মানিকছড়ির বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। সপ্তাহে শনিবার ও সোমবার সকাল থেকে বিকাল বিদ্যুৎ না থাকা এবং অন্যান্য সময়ে ২৪ ঘন্টায় ১৬/১৭ ঘন্টা লোডশেডিং যন্ত্রণার পাশাপাশি লো-ভোল্টেজ সমস্যায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে । এছাড়াও ভূয়া বিল, অবৈধ সংযোগের বিল ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়াসহ নানাভাবে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আসছে দিনের পর দিন। যার কারণে সোমবার সকাল থেকে মানিকছড়ি, মহামুনি ও তিনটহরী বাজারের সহস্রাধিক দোকান-পাট বন্ধ রেখে আধা-বেলা ধর্মঘট ও বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করার পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। এদিকে সোমবার সকাল থেকে বাজারের শতশত দোকান-পাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা মিছিলসহ রাস্তায় নেমে আসে। সকাল-১০ থেকে ১২ পর্যন্ত সকল ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে রাখে। পরে সেখানে বিদ্যুৎ কর্মকর্তার দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানীর তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ী নেতা মো. নুর ইসলাম, মো. আকতার হোসেন ভূইঁয়া, মো. কাউচার হামিদ প্রমূখ।
সমাবেশের এক পর্যায়ে মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী ডিগ্রী কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাওকালে প্রায় ১ ঘন্টা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কের দু’পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর চেষ্টায় সড়কে গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মাকরলিপি প্রদান করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এ.রাজ্জাক প্রমূখ।
স্মারকলিপি গ্রহন শেষে উপজেলা নিবার্হী অফিসার যুথিকা সরকার আন্দোলনরত ব্যবসায়ী কর্তৃক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট অভিযোগ (স্মারকলিপি) উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবাসিক বিদ্যুৎ প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দীন অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় মুঠোফোনে বলেন, এখানকার বিদ্যুৎ সমস্যাটি স্থানীয় সমস্যা না। বিদ্যুৎ বিভ্রাট কিংবা লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণ হয় চট্টগ্রামের হাটহাজারী সাব স্টেশন থেকে। ফলে অহেতুক এ বিষয়ে স্থানীয় বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টদের দোষারোপ করা হচ্ছে।