নি:সন্তান দম্পতির ঘরে ঠিকানা খুঁজে পেল কুড়িয়ে পাওয়া ২ দিন বয়সি শিশু “মুক্তি”

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে এক দম্পতির একটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়েছে। পরে জন্ম নেয়া নবজাতক শিশুটিকে হাসপাতালে ফেলে রেখে তার গর্ভধারিণী মা ও তার পরিবার পালিয়ে যায়।

বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হলে তিনি শিশুটিকে নিজ হেফাজতে নিয়ে যান। হাসপাতালে কুড়িয়ে পাওয়া শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ‘মুক্তি’। নবজাতক এই শিশুর বয়স মাত্র ২দিন। পরে শিশুটির দত্তক নিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই ইউএনওর কাছে আবেদন করেন। অনেকেই নবজাতক শিশু মুক্তিকে দত্তক নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে সবদিক বিচার-বিবেচনা করে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষে নি:সন্তান এক ব্যবসায়ী দম্পতিকে ওই শিশু তুলে দেয়া হয়।

গত রবিবার বিকেলে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ব্যবসায়ী এক দম্পতির কোলে শিশুটিকে তুলে দেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান। নি:সন্তান ওই দম্পতি একটি সন্তানের জন্য বহুকিছু করেছেন। কিন্তু সন্তানের মুখ দেখা হয়নি। নি:সন্তান ওই দম্পতি নবজাতক মুক্তিকে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে তাঁর ভরণ-পোষণ ও পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়ে শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছেন ইউএনও। যাতে শিশুটি ওই বাবা-মায়ের পরিচয়ে বড় হতে পারে। এ কাজে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও ইপসা এনজিওর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দত্তকপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী দম্পতি বলেন, নবজাতক শিশু মুক্তিকে তাঁরা যথাযথভাবে আদর, স্নেহ ও ভালোবাসায় লালন-পালন করবেন। তাকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন। শিশুটি ওই দম্পতির সন্তান পরিচয়ে সামাজিকভাবে বড় হবেন। তাঁরা আশা করেন শিশুটি একদিন বড় হয়ে পড়ালেখা শিখে মানবসেবায় ব্রতী হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, নবজাতক শিশুটিকে দত্তক নিয়ে লালন-পালন করার জন্য এলাকার বেশ কয়েকজন আবেদন করেন। শিশুটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে আবেদনের ভিত্তিতে অভিভাবক নির্ধারণ করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের পরামর্শে নি:সন্তান এক দম্পতির কাছে শিশুটি তুলে দেওয়া হয়। আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে তাদের কাছে শিশুটি তুলে দিয়েছি। গত দুই দিনেও শিশুটির প্রকৃত পিতা-মাতার কোন খোঁজ মেলেনি।

তিনি আরও বলেন, সাহারবিল ইউনিয়নের নি:সন্তান এক দম্পতির কাছে শিশুটিকে অভিভাবক হিসেবে তুলে দেয়া হলেও শিশুটির প্রতি আমার দায়িত্ব শেষ হয়নি। আমি শিশুটির বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখবো। পাশাপাশি যেকোনো প্রয়োজনে তার পাশে থাকার চেষ্টা করবো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন