পানছড়িতে মডেল কেয়ারটেকার পদে অস্থায়ী বাসিন্দাকে নিয়োগের পাঁয়তারা

fec-image

অনিয়ম

শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি:

জেলার পানছড়ি উপজেলায় সাব্বির মাহামুদ নামে এক অস্থায়ী বাসিন্দাকে পানছড়িস্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মডেল কেয়ারটেকার পদে নিয়োগ দেয়ার পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৬ষ্ঠ পর্যায়) প্রকল্পের মডেল ও সাধারণ রিসোর্স সেন্টার কেয়ারটেকার পদের জন্য গত ১৪-১-২০১৫ ইং তারিখের দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই বিজ্ঞপ্তি মূলে পানছড়ি উপজেলা হতে মডেল কেয়ারটেকার পদে ৫ জন ও সাধারণ কেয়ারটেকার পদে ৩ জন আবেদন করে। আবেদনকারী সবাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।

উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৫নং অনুচ্ছেদের “খ“ নং এ স্পষ্ট লেখা রয়েছে ‘সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় এবং স্থায়ী বাসিন্দা যার নিজ বাড়ি রিসোর্স সেন্টারের ২ (দুই) বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে শুধুমাত্র তারাই আবেদন করতে পারবেন।’ কিন্তু এসব শর্তাবলীকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অত্র এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও মডেল কেয়ারটেকার পদে সাব্বির মাহামুদের চাকুরী প্রায় হাতের মুঠোয়। এরি মাঝে সাব্বির আহাম্মদের হাতে পৌঁছে গেছে খাগড়াছড়ি জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বিভিন্ন কাগজ-পত্রাদি। সাব্বির আহাম্মদ এখন পানছড়ি থানার আশ-পাশ এলাকায় ঘুর ঘুর করছেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের অপেক্ষায়। এ নিয়ে পানছড়ির সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে জমে উঠেছে নানা ক্ষোভ। একজন উড়ে এসে জুড়ে বসা লোকের কাগজ-পত্রাদি যাচাই-বাছাই না করে কিভাবে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায় তা নিয়ে জেগেছে নানা মনে নানান প্রশ্ন। এলাকায় স্থানীয় জনগণের মাঝে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ এখন মাত্র বিষ্ফোরণের অপেক্ষায়।

এ ব্যাপারে সাব্বির মাহামুদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, অত্র এলাকায় তার কোন ঘর-বাড়ি নেই। ভোটার আইডি কার্ড ভবিষ্যতে পানছড়ির ঠিকানায় পরিবর্তন করবেন বলে তিনি জানান। তার নিয়োগ সংক্রান্ত জেলা অফিস থেকে কোন কাগজ পত্র পাওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে মডেল কেয়ারটেকার পদে সাব্বির মাহামুদ ও সাধারণ কেয়ারটেকার পদে ইসমাইল বিন ইউসুফ ও দানেশ আলীকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নেয়ার জন্য ফরম দেয়া হয়।

এ নিয়ে পানছড়ির দায়িত্বে থাকা খাগড়াছড়ি জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশান এর মো: ওযাইর এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। ইসলামিক ফাউন্ডেশন খাগড়াছড়ি জেলার পরিচালকের মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি জানান, স্যারের নাম্বার দেয়া নিষেধ আছে। তিনি নাম্বার দিতে পারবেন না।

এ ব্যাপারে পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো: বাহার মিয়ার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সাব্বির আহাম্মদ গত দুই বছর আগে উপজেলার লোগাং বাজার জামে মসজিদ থেকে পানছড়ি উপজেলা মসজিদে ঈমাম হিসাবে যোগ দেয়। সে মসজিদ কোয়াটারে থাকে। তার নিজস্ব কোন জায়গা সম্পত্তি বা ঘর-বাড়ি অত্র উপজেলায় নাই। মডেল ও সাধারণ রিসোর্স সেন্টারের কেয়ারটেকার পদের জন্য তার দেয়া আবেদনখানা সঠিক যাচাই-বাছাই না করার ফলে স্থানীয় ফাজিল বা সমমানের ডিগ্রীধারিরা বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি জানান, সঠিক বাছাইয়ের এখনও সময় আছে।

পানছড়ি উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো: বেলাল হোসেন জানান, যেখানে বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে স্থানীয় ও স্থায়ী বাসিন্দারা আবেদন করতে পারবে, সেখানে অস্থায়ী বাসিন্দা হলে তাকে বাতিলপূর্বক স্থায়ী কাউকে নিয়োগ দেয়া হোক।

পানছড়ির অভিজ্ঞ মহল বলছে, তথ্য গোপন রেখে দু’নম্বর কাগজ-পত্র দিয়ে সাব্বির আহাম্মদ এই পদের জন্য আবেদন করেছে। যা জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাথে যোগসাজস থাকতে পারে। তথ্য গোপন রেখে ভূয়া কাগজ পত্রাদি দিয়ে এসব অপকর্মের জন্য সাজা হওয়া দরকার বলেও মনে করছেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন