পৃথক অগ্নিকাণ্ডে বসতঘরসহ ৬০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই, ৪কোটি টাকার ক্ষতি

11.2.15 (2)রামগড় প্রতিনিধি:

ফটিকছড়িতে পৃথক দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বসতঘরসহ ৬০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে।বুধবার সকালে ফটিকছড়ির উপজেলার লেলাং ও দুপুরে হেঁয়াকো বাজারের চেয়ারম্যান রোডে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দুটি ঘটে। এতে প্রায় চার কোটি টাকার সম্পদ ভস্মীভূত হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবী। আগুন নেভাতে গিয়ে আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন।

দাঁতমারা ইউপি সদস্য ও হেঁয়াকো বাজারের চেয়ারম্যান রোডের বাসিন্দা পেয়ার আহম্মদ জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে বাজারের চেয়ারম্যান রোডের পশ্চিম পার্শ্বে জনৈক রাসেল সওদাগরের ফলের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সূত্রপাত হওয়া আগুন মুহুর্তের মধ্যে আশপাশের দোকান এবং বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা হাবীবুল্লাহ বাহার জানান, জনৈক আবুল কালামের রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুর রসিদ সরকার জানান, এক ঘণ্টার আগুনে ইসমাঈল মাস্টারের নিজের বসতঘর ও ভাড়াঘর, রনি কম্পিউটারের মালিকের নিজের বসতঘর ও ভাড়া ঘর, নুরুল ইসলামের বসতঘর ও ভাড়া ঘর, সামশুন নাহারের বসতঘর, বেলালের বসতঘর, কাঞ্চনের বসতঘর, বকুল মাস্টারের ভাড়া ঘর, আলী হোসেন ডাক্তারের ভাড়া ঘর, জসিম সওদাগরের মুদি মালের ৮টি গুদাম, আবু আহম্মদের দোকান ও বসতঘর সহ বিভিন্ন শ্রেণির দোকান, বসতঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গোডাউনসহ অন্তত প্রায় ৫০টিরও বেশী বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে সম্পূর্ন পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় তিন কোটি টাকারও বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান হেঁয়াকো বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন।

এদিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে হেঁয়াকো বিজিবি ক্যাম্প, দাঁতমারা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ, রামগড় ফায়ার সার্ভিস প্রায় দুই ঘণ্টা প্রচেষ্টা চালিয়ে বিকাল চারটা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রামগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র স্টেশন কর্মকর্তা হাবীব উল্লাহ বাহার জানান, প্রায় ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দমকলকর্মীরা প্রায় দুই ঘন্টা চেস্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনাস্থলের আশেপাশে কোন পুকুর বা জলাশয় না থাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার দূরের পুকুর থেকে পাইপ লাইন টেনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়েছে। এ ছাড়া সরু গলি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে দ্রুত সেখানে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়।

এদিকে দীর্ঘক্ষণ ধরে জ্বলতে থাকা আগুন নেভানোর সময় হুড়াহুড়ি করে নিজেদের মালামাল রক্ষা করতে গিয়ে আগুনের তাপ ও টিনে কাটা পড়ে আহত হয়েছে অন্তত ১৫ ব্যক্তি। এ ছাড়া অনেক ব্যবসায়ীর বিভিন্ন ধরনের মালামাল নষ্ট হয়েছে বলে জানান চাউল ব্যবসায়ী অলক দে।

এদিকে আগুনে সবর্স্ব পুড়ে যাওয়ার পর এখন খোলা আকাশের নীচে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অবস্থান করছে। দাঁতমার ইউপি চেয়ারম্যান মো. জানে আলম দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ব্যবসায়ীদের সরকারীভাবে সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।

এদিকে ফটিকছড়ির লেলাং ইউনিয়নের শাহ্ নগর এলাকার কামিল মিস্ত্রীর বাড়িতে বুধবার সকাল ১১ টায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৬টি বসতঘর সম্পূর্ণ রূপে ভস্মীভূত হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডে মুহাম্মদ নুরুল আলম, মুহাম্মদ জানে আলম, মুহাম্মদ শাহ্জাহান, মোমেনা বেগম ও মুহাম্মদ হারুন এর বসত ঘর ভস্মীভূত হয়। রান্নার চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন