পেকুয়ায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। পাহাড়ী ঢলে ও মাতামুহুরী নদীর পানি ঢুকে টানা বৃষ্টির কারণে পেকুয়ার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ গত তিন দিন ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। একইভাবে গত তিন ধরে বিদ্যু সংযোগ দেখা নেই। তিনটি ইউনিয়নে   পাউবোর নিয়ন্ত্রনাধীন বেধিবাধঁ ভেঙ্গে যাওয়ায় কমপক্ষে ৩০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। পেকুয়ার উপজেলার সদর ইউনিয়নে সালাহ উদ্দিন ব্রীজের উত্তরদিকে বেড়িবাধের দুপয়েন্টে ভেঙ্গে যাওয়ায় নতুন ভাবে আরো নতুনভাবে ৮ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সেগুলো হল পেকুয়া সদর ইউনিয়নের নন্দীরপাড়া, পূর্বমেহেরনামা, হরিণাফাঁড়ি, বলির পাড়া, মোরারপাড়া, সৈকতপাড়া, চৈরভাংঙ্গা, তেলিয়াকাটা প্লাবিত হয়েছে। এ দিকে পূর্ব মেহেরনামা এলাকায় পাউবোর বেড়িবাধঁ মাতামুহুরী বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বেড়িবাধঁ ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।

পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহের নেতৃত্বে ওই ফাটল বেড়িবাধঁ মেরামতের কাজ চলছে অপরদিকে শিলখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন সিকদার জানান টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী টলের তোড়ে ইউনিয়নের পেঠান মাতবর পাড়া, হাজিরঘোনা, দোকানপাড়াসহ প্রায় ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উজানটিয়া ইউনিয়নের দু পয়েন্টে বেড়িবাধঁ বিলীন হয়েছে। এতে করে উজানটিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে পানিবন্দী হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। মাতামহুরী নদীর পানি বিপদমসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানির আঘাতে উজানটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়া গোদারপাড়া স্টেশনের অদূরবর্তী স্থানে দুটি পয়েন্টে বেড়িবাধঁ বিলীন হয়েছে।

২৪ জুলাই দুপুরে গোদারপাড় কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন স্থানে মাতামহুরী নদী পয়েন্টে পৃথক বেধিবাধ বিলীন হয় বেড়িবাধের ভাঙ্গন অংশ দিয়ে মাতামুহরী নদীর পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে করে গতকাল দুপুর থেকে এই ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়ার সুতাচোরা গোদারপাড়া, দক্ষিণসুন্দরীপাড়া, নুরীর পাড়া, রুপালীবাজার পাড়া, দক্ষিণ সুতাচুরা, মালেকপাড়া, ঠান্ডার পাড়া, আতরআলী পাড়াসহ বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। উজানটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বেড়িবাধেঁর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি জানান গোদারপাড় সংশ্লিষ্ট পাউবোর বেড়িবাধঁ পূর্ব থেকে ঝুকিপূর্ণ ছিল। জানমালের ক্ষতি লাঘব করতে বেদিবাধেঁর ক্ষতিগ্রস্ত এ অংশটি সংস্কার করতে আমি পাউবোকে পূর্ব থেকে অবহিত করেছি।

পাউবোর এসও গিয়াস উদ্দিন উজানটিয়া এসেছিলেন। তার উপস্থিতিতে বেড়িবাধেঁর দুটি অংশ বিলীন হয়েছে। এ দিকে প্রবল বর্ষণে পেকুয়ার নিম্নঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে উপজেলার শিলখালী বারবাকিয়া ও টইটং ইউনিয়নের বিপুল এলাকা প্লাবিত হয়ে বীজ তলা পানিতে তলীয়ে যায়। পাহাড়ী ঢলের পানি উজানের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে মাতামহুরী নদীসহ শাখা নদীগুলিতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে উপজেলার প্রধান সড়ক চকরিয়া মগনামা সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।চকরিয়া পহরচাঁদা সীমান্ত ব্রীজ থেকে শীলখালী ইউনিয়নের হাজিরঘোনা সালাহ উদ্দিন ব্রীজ পর্যন্ত সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে গত দুই দিন ধরে।

উজানটিয়া ইউনিয়নের বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বেড়িবাধঁ বিলীন হওয়ায় এ ইউনিয়নের শত শত বাড়িঘর পানিতে বন্দী হয়ে গেছে। গ্রামীন অবকাঠামো পানিতে তলিয়ে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোতে পানি প্রবেশ করে শিক্ষা প্রতিষ্টানের শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করে কর্তৃপক্ষ। চিৎড়ি ঘের মৎস্যখামার ও বীজ তলা পানিতে তলিয়ে যায়। এদিকে রাজাখালী ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর জানান, বেড়িবাধঁ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করে তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অপর দিকে বারবাকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাও বদিউল আলম জানান ভারুয়াখালী বারাইয়াকাটা বুধামাঝির ঘোনা নাজিরপাড়াসহ প্রায় ৬টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্টানর পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন