বদলে যাচ্ছে বান্দরবান পৌরশহরের চিত্র

fec-image

বদলে যাচ্ছে বান্দরবানের পৌর এলাকার শহরে চিত্র। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই পৌরসভা অধীনে বসবাস করছে অসংখ্য মানুষ। বিভিন্ন সড়ক দিয়ে ছুটাছুটি ব্যস্ততা যেন থেমে নাই সাধারণ মানুষের। কেউ অফিসে কাজে, কেউ বিভিন্ন কাজের সন্ধানে আবার কেউ নিজ পেশায় কাজে দৌরাত্মে। তবে পর্যটন শহর হলেও বান্দরবান পৌরসভার অন্যতম জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ছিল কলেজ সড়ক হয়ে গণপূর্ত ভবন পর্যন্ত।

এই সড়ক দিয়ে হরহামেশায় চলাচল করেন দিনে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ । তাছাড়া সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে জেলখানা, সিভিল সার্জন কার্যালয়, হাসপাতাল, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠা্ন। তাই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বিভিন্নস্থানে নষ্ট হয়ে যাওয়াতেই জনগনের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। বৃষ্টি হলে কাদা ও পানিতে তলিয়ে যেত সড়কটি। এসব সড়কে চলাচল করতে প্রতিদিনই নানা দুর্ঘটনার পাশাপাশি চরম ভোগান্তিতে পোহাতে হতো পৌরবাসীকে। অবশেষে কয়েক বছর পর পৌরবাসীর দুর্ভোগ দূর করতে পৌরসভার উদ্যাগে হাসপাতাল সড়কটি শুরু হয় সংস্কারের কাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবান কলেজ থেকে গণপূর্ত কার্যালয় পর্যন্ত দুরত্ব রয়েছে প্রায় এক কিলো। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে প্রায় কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ। তবে গুরুত্বপূর্ন ছিল সদর হাসপাতাল। প্রতিদিন গর্ভবতী নারী ও নানান রোগী হাসপাতালের যেতে হত এই সড়কটি দিয়ে। তাছাড়া কালাঘাটা, কেচিংঘাটা গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যার ফলে স্কুল শিক্ষার্থীর এক মাত্র সড়ক হওয়াতেই ভোগান্তির যেন শেষ ছিল নাহ। অন্যদিকে নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় প্রায় সময় পড়তে হত যানজটে। সড়কের পাশে বাস কিংবা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রাখাতেই ছোট হয়ে যায় সড়কটি। এমন দুর্ভোগের নিরসনের জন্য পৌরসভা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অর্থায়নেব উন্নয়নমূলক কাজ প্রকল্প নেওয়া হয়। এতে অনেকটাই ভোগান্তি কমবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বান্দরবান পৌরসভা ও উন্নয়ন বোর্ড দেওয়া তথ্য মতে, সরকারি কলেজের সামনে থেকে গণপূর্ত বিভাগের সামনে পর্যন্ত প্রায় ৭৫০ মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। এছাড়াও উন্নয়ন বোর্ড অর্থায়নে সড়কের পানি জলাশয় থেকে মুক্ত রাখতে হাসপাতাল হতে বৌদ্ধ বিহার মোড় পর্যন্ত ড্রেন ও যানজট মুক্ত রাখতে নতুন নির্মিত বাস টার্মিনাল কাজ শুরু হয় হয়। যার দুটি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির বেশির ভাগই রয়েছে ভাঙ্গা,ও খানাখন্দ ভরা। ফলে রোদ থাকলে ধুলোয় একাকার আর বৃষ্টি হলে হয় প্রচুর কাদা। সড়কের বিভিন্ন গর্ত থাকার ফলে পানি জমাট হয়ে যেত। এতে প্রায় সময় ঘটে যেত দুর্ঘটনা। এখন তা পালটে যাচ্ছে সড়কের চিত্র। ৭৫০ মিটার সড়কের এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে সংস্কারে কাজ। অন্যদিকে সড়কের যান যানজট ও জলাশয় মুক্ত রাখতে ড্রেন ও বাস টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু করেছে। চলছে নবনির্মিত বাস টার্মিনালে মাটি ভরাটের কাজ। স্থানীদের দাবী দ্রুত এই প্রকল্পের কাজটি শেষ হলে বদলে যাবে পৌর শহরে এলাকার চিত্র।

বান্দরবান পৌর এলাকার বাসিন্দা তৈয়ব,হাসান ও রুপনা দাশসহ কয়েকজন জানান, প্রতিদিন কালাঘাটা থেকে সদরে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করাতে এলাকার জনগণ কষ্টে জীবনযাপন করেছে। অবশেষে এবার হাসপাতাল সড়কটি মেরামত করা হচ্ছে। এতে চলাচলকারীদের আগের চেয়ে বাড়বে আর ভোগান্তিও অনেকটাই কমবে। এছাড়াও নির্দিষ্টভাবে বাস টার্মিনাল না থাকায় বাসগুলো নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে যেখানে সেখানে রেখে যাচ্ছে। তাই এখন নতুন বাস টার্মিনাল হলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বান্দরবান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইয়াসিন বীন আরাফাত বলেন, বিভিন্ন স্থানে পানি জমাট হওয়ার কারণের জলাশয় নিরাসনের জন্য ড্রেনের কাজ ও নির্দিষ্ট স্থানে বাস রাখার জন্য টার্মিনালে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময় কাজ শেষ করে পৌর এলাকার চিত্র পাল্টে যাবে।

বান্দরবান পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৌরভ দাশ শেখর বলেন, পৌরসভা দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল সড়কটির সংস্কার কাজটি প্রাধান্য দিয়েই প্রথমেই এই সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করেছি। খুব দ্রুত সময়ে এই সংস্কার কাজ শেষ হলে জনগণের ভোগান্তি অনেকটাই কমে যাবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন