বন্ধ শেষে আবারো সাগরের পথে জেলেরা: উৎসবের আমেজ
নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ থেকে সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছে জেলারা। এতে কক্সবাজারের জেলে পল্লীগুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ। জেলে, ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের আশা; জালে ধরা পড়বে প্রচুর ইলিশসহ সামুদ্রিক অন্যান্য প্রজাতির মাছ। এতে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ের ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
এদিকে মৎস্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আবহাওয়া পরিস্থিতিসহ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
সাগরে মাছ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। এতে কক্সবাজারের জেলে পল্লীগুলোতে চলছে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার শেষ মুর্হূতের প্রস্তুতি। আর এই প্রস্তুতি ঘিরে জাল মেরামত, ট্রলারে চাল-ডাল-তেলসহ নানা উপকরণ এবং জ্বালানি তেল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটছে জেলে ও ট্রলার মালিকদের।
এ নিয়ে কক্সবাজারের জেলে পল্লীগুলোতে বিরাজ করছে উৎসাহ ও উদ্দীপনা। আবারও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ নিয়ে ফেরার আশায় বুক বাঁধছেন তারা। তবে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে প্রতিবেশী দেশ ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের জেলেরা আমাদের সাগরে মাছ ধরা অব্যাহত রাখায় প্রত্যাশা পূরণে দুঃশ্চিন্তাও রয়েছে জেলে ও ট্রলার মালিকদের।
জেলে ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন কর্মহীন থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে ছিলেন। সরকারিভাবে সহায়তার যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় ছিল অপ্রতুল। তাই সহায়তার এই বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানোর দাবি তাদের।
ট্রলার মালিক জয়নাল আবেদীন জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে তারা সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় গত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর তারা কাঙ্খিত পরিমান ইলিশসহ অন্য প্রজাতির মাছ ধরতে পারেননি। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা তারা বুক বেঁধেছেন।
কক্সবাজার সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা তারাপদ চৌহন জানান, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাকালীন নিবন্ধিত জেলেদের সরকারিভাবে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। জেলার আর কিছু জেলে অনিবন্ধিত রয়েছে। ভবিষ্যতে এসব জেলের নিবন্ধনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তারা আশা করছেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় চলতি মৌসুমে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ ধরার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে।
কক্সবাজার জেলায় জেলের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশী। এর মধ্যে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২২ সহস্রাধিক। মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাকালীন নিবন্ধিত এসব জেলেদের সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আর নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ট্রলারের সংখ্যা অন্তত ৬ হাজার।