বাইশারীতে বোরো ফসল কাটতে ব্যস্ত কৃষক: দাম নিয়ে হতাশা

Capture copy
মো. আবুল বাশার নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি:
একদিকে শ্রমিকের মজুরী বৃদ্ধি ও অন্যদিকে নানা প্রতিকূলতায় পর্যাপ্ত ফলন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের বোরী চাষীরা। স্থানীয় বোরো চাষী কবির আহামদ দুই কানি জমি চাষাবাদ করেছেন। পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় সেচ পাম্প দিয়ে তাকে বোরো আবাদ করতে হয়েছে। যার কারণে খরচ পড়েছে অন্তত ১৫ হাজার টাকারও অধিক। কিন্তু মৌসুম শেষে ফলন হয়েছে মাত্র ৫০ আড়ি। এছাড়া শ্রমিকদের মজুরী তিন বেলা ভাত দেওয়ার পর ৫০০ টাকা। ভাত না দিলে ৫৫০ টাকা। এতে ধান উৎপাদনের পর শ্রমিকদের মজুরীও উঠছে না বোরো চাষীদের।

বাইশারী ইউনিয়নের আরেক বোর চাষী মনিরুল হক জানান, পানির অভাবে জমির ধানে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। উৎপাদিত প্রতি আড়ি ধান ১৭০ টাকা খরচ হলেও বিক্রিয় মূল্য ধরা হয়েছে ৮০ টাকা মাত্র। এভাবে লোকসান হলে কি করে কৃষক বাঁচবে। একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে ঠিক একই রকম কথা শুনা যায়। বছরের শুরুতে সরকার ধানের আগাম মূল্য ঘোষণা করায় খুশি হলেও বাজারে দাম নিয়ে হতাশ শত শত কৃষক।

জানা গেছে, ইউনিয়নের ফারিখালের সেচ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায়নি। এছাড়াও প্রয়োজনের সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ও তাপদাহের কারণে বোরো ধানে বিভিন্ন রোগাক্রান্ত হয়েছে। এসব রোগ প্রতিরোধে স্থানীয় দোকান গুলোতে সঠিকভাবে কীটনাশকও পাওয়া যাচ্ছে না। সবদিক মিলিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন মহাজন ও এনজিও’র অগ্রিম ঋণের টাকা নেয়া কৃষকেরা বর্তমানে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, পুরো বাইশারীতে হাজার একর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে অনেকটাই কম। সরকার চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ২২ টাকা কেজি দরে ধান ও ৩২ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয়ের ঘোষণা দেন। চলতি মাসের ২য় সপ্তাহ থেকে ধান ক্রয় করা হবে।

ধান কাটা ও মাড়াই উৎপাদিত ধান প্রয়োজনের তাগিদে কৃষকরা উঠান থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। সরকারী ঘোষিত মূল্যের চেয়ে ১০ টাকা কমে কৃষকের ধান বিক্রি হচ্ছে।

সূত্র মতে, প্রতি কানি জমিতে ৫০ থেকে ৬০ আড়ির মত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কম এবং প্রতি কানি জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করতে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

বাইশারী ইউনিয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল আলম জানান, বোরো ধানের ফলন পর্যাপ্ত পানির অভাব ও অতি তাপদাহ এর কারণে একটু কম হলেও বাইশারীর কিছু কিছু জায়গায় ভালো ফলনের খবর পাওয়া গেছে। তবে দাম আশানুরূপ না থাকায় কৃষকরা শঙ্কিত।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন