বাঙালী ছাত্র পরিষদ নেতা মাইনুদ্দীনকে পিটিয়েছে প্রতিপক্ষ গ্রুপ

স্টাফ রিপোর্টার:
পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার একাংশের সভাপতি মাইনুদ্দীনকে পিটিয়েছে প্রতিপক্ষ গ্রুপ। শুক্রবার সন্ধায় শহরের শাপলা চত্তর সংলগ্ন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে প্রতিপক্ষের কর্মীরা বেদমভাবে মাইনুদ্দীনকে প্রহার করেছে।

প্রতিপক্ষের প্রহারে মারাত্মক আহত মাইনুদ্দীন বর্তমানে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও খাগড়াছড়ি পৌর কাউন্সিলর আবদুল মজিদের নেতৃত্বে পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের একটি মিটিং চলছিলো জেলা শহরের শাপলা চত্তর সংলগ্ন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি লোকমান হোসেন ভুঁইয়া।

সন্ধ্যার কিছু পরে মিটিং স্থলে হাজির হন অপর অংশের সভাপতি ও মূল অংশের বহিস্কৃত নেতা মাইনুদ্দীন। এসময় বাঙালী ছাত্র পরিষদের মূল অংশের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মজিদ গ্রুপের কর্মীরা মাইনুদ্দীনকে প্রহার করে। তবে কারা কারা এই প্রহারে অংশ নিয়েছে তা জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে মাইনুদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি পার্বত্যনিউজকে বলেন, মাগরিব নামাজ পড়ে আমি ঈদগাহ সংলগ্ন মাঠে দাড়িয়ে দুই ছোটভাইয়ের সাথে কথা বলছিলাম। এসময় ১০-১৫ টা মটর সাইকেলে মজিদ তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ওই এলাকায় প্রবেশ করে। এসময় নেজাম নামে তাদের এক কর্মী এসে আমাকে বলে, মজিদ ভাই আপনাকে এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। আমি অস্বীকার করায় তার কর্মীরা আমার উপর মারধোর শুরু করে। এতে আমি চোখে, চোয়োলে, মাথায় ও বাহুতে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছি।

মাইনুদ্দীনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মজিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি পার্বত্যনিউজকে এ ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে বলেন, সে নানা ধরণের অপকর্মের সাথে জড়িত। সেকারণে প্রায়ই বিভিন্ন স্থানে মারধোর খায়। কিছুদিন আগেও মারধোর খেয়েছে। কাজেই কোন ঘটনায় কারা মেরেছে তা বলা মুশকিল।

এদিকে মাইনুদ্দীনের এই প্রহারের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তার গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌর কাউন্সিলর এস এম মাসুম রানা তার ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে লিখেছেন, ‍‍‌‌অধ্য ২৮-৭-২০১৭ ইং রোজ শুক্রবার সন্ধার পর পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি (ভাঃ) মো: মাইন উদ্দিন ভাই কে খাগড়াছড়ি শাপলাচত্বর সংলগ্ন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে কিছু বাঙালী রূপের নিকৃষ্ট দালালরা তার উপর পরিকল্পিত হামলা চালায়।।

এমনকি এখন তিনি খাগড়াছড়ি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমরা পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার পক্ষ থেকে মাঈন উদ্দিন ভাইয়ের উপর এই পরিকল্পিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এবং প্রশাসনের প্রতি আহবান জানাচ্ছি এই ন্যাক্কার ঘটনা যারা ঘটিয়েছে সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে তাদের শিঘ্রই আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক। অন্যথায় যদি কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার দায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে।

এদিকে পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ফরাজী শাহাদত হোসেন সাকিব পার্বত্যনিউজকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একটি বহৎ সংগঠনে অন্তদ্বন্দ্ব থাকবেই। এটা স্বাভাবিক। মাইনদ্দীনকে কে বা কারা মেরেছে তা আমরা জানি না। তেব এর সাথে বাঙালী ছাত্র পরিষদের কেউ যদি জড়িত তাকে তবে সেটা অনভিপ্রেত। আমরা সকলকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আশা করি অচিরেই আমরা নিজেদের মধ্যে বসে এ সমস্যার সমাধান করতে পারবো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন