বান্দরবানে জেঁকে বসেছে শীত

fec-image

পাহাড়ে পাহাড়ে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে পাহাড়ি জনপদ জেলা বান্দরবান। দুর্গম এলাকার পাহাড়ে পাহাড়ে পুরোদমে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। দুর্গম পাহাড়ের বেশীর ভাগ মানুষেরই দরিদ্র সীমার নীচে বসবাস। তাই এই শীতের শুরুতেই গরম কাপড়ের অভাবে থর থর করে কাঁপছে হতদরিদ্র পাহাড়ি জনপদের মানুষ। তাছাড়া গত এক সপ্তাহ ধরে জেলা জুড়ে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে চারপাশ। একই সঙ্গে বয়ে আসা পাহাড়ি হিম বাতাসে জনজীবনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

বান্দরবান ১ম শ্রেণীর আবাহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তথ্য মতে, গতকাল বান্দরবানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক শুন্য, সর্বোচ্চ ছিল ২২ দশমিক ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ জেলায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ২ ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাছাড়া দুইদিন পর চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্যঞ্চলে শীত বাড়ানো পাশপাশি গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বিভিন্ন দুর্গম এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, বান্দরবানের থানচি, রুমা লামাসহ সাতটি উপজেলা সন্ধায় হলে পাহাড়ের জেঁকে বসেছে শীত। ঘনকুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের ফলে শীতে কাপছে দুর্গম এলাকার পাহাড়ি জনপদের মানুষ। সকাল-সন্ধায় বাড়ি-বাড়ি আগুনের কুন্ড জ্বালিয়ে হতদরিদ্র মানুষ শীত নিবারনের ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আগুনে পোহাচ্ছেন সকল বয়সের মানুষ। দিনের বেলা প্রয়োজনীয় কাজ শেষে অনেকেই নিজ বাড়িতে ফিরছেন। কেউবা ছেড়া কাঁথা মুড়িয়ে প্রচন্ড শীতে থর থর করে কাঁপছে। এ বছর শীতের তীব্রতা বেশী হওয়ায় সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হতদরিদ্র মানুষ। এতে রাতে ও সকালে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম দেখা গেছে। অন্যদিকে, শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় এবার ক্রেতা যেমন বেড়েছে তেমনি বিক্রিও হচ্ছে ভাল।

চৌধুরী মার্কেট এলাকার কাপর বিক্রেতা আব্দুল মনসুর বলেন, এবার বান্দরবানে প্রচুর শীত পড়ছে। যার কারণের সাধারণ মানুষ শীতের পোষাকসহ বিভিন্ন কিছু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। যেমন শীত বাড়ছে তেমন বিক্রিও ভালো হচ্ছে।

দুর্গম এলাকার গ্রামবাসীরা জানান, তীব্র শৈত্য প্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কনকনে ঠাণ্ডার চরম অসহায় হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে গোটা পাহাড়ের মানুষ। তীব্র শীতে কাজে যেতে পারছে না নিম্নবিত্ত ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। হতদরিদ্র মানুষ শীত মোকাবেলায় চরমভাবে হিমশিম খেলেও কেউ এগিয়ে আসছেন না।

থানচি বনয়ক পাড়া বাসিন্দা প্রং লক ম্রো জানান, সকালে হলে শীতের কুয়াশায় রাস্তা দেখা যায় না। তাছাড়া ভোরে আগুনে পোহাতে হয় সবাই মিলে। প্রচুর শীত পড়ার কারণের কাজকর্ম করা যাচ্ছে নাহ।

বান্দরবানের ১ম শ্রেণীর আবাহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল বলেন, বর্তমানে যে শীত পড়ছে সেটি আরো কয়েকদিন বাড়তে পারে। রাতে কিংবা সকালে তাপমাত্রা এক হতে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি পার্বত্যাঞ্চলে হালকা কিংবা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন