বান্দরবানে ঝিরি ঝর্ণার পাথর উত্তোলন: নেপথ্যে কারা?

fec-image

বান্দরবানে পাহাড় ও ঝিরি ঝর্ণা থেকে নির্বিচারে পাথর উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলার সদরের টংকাবতি, রোয়াংছড়ির নোয়াপতং, লামার লাইনঝিরি, কাঁকড়াঝিরি, হরিণ ঝিরি, টাকের পানছড়ি মৌজা, ডলুঝিরি, শীলের তোয়া, কাঁঠালছড়া, নন্দির বিল, ফাঁসিয়াখালী, রুমা, থানচি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি, সোনাইছড়ি প্রভৃতি এলাকার ঝিরি ও পাহাড় খুঁড়ে পাচারকারীরা পাথর উত্তোলন করছে। এসব এলাকা থেকে পাথর পরিবহণের জন্য পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। যার কারণে এখানকার পরিবেশ হুমকির মধ্যে রয়েছে।

বিশেষ করে শীতকালে এক শ্রেণির দুষ্কৃতকারীরা খাল-ঝিরি থেকে হাজার হাজার ঘনফুট পাথর উত্তোলন করে থাকে। পরবর্তী তাদের সুবিধানুযায়ী বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পাথর উত্তোলন ও পরিবহণের সময় প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা চালাতে হয় পাথর ব্যবসায়ীদের।

এদিকে বিভিন্ন উপজেলায় পাথর উত্তোলনের সাথে শতাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে জেলা সদরের বশির খান নামে জনৈক ব্যক্তি বান্দরবানে পাথর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে।

এই প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি জুমলিয়াম আমলাই বলেন- পাহাড়ে পাথর উত্তোলনের জন্য ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। কিন্তু সেখানে প্রশাসন আইন প্রয়োগ করছেনা। যার কারণে প্রশ্ন থেকে যায় এই পাথর উত্তোলনের সাথে প্রশাসনের কেউ কেউ জড়িত কিনা?

পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান উপপরিচালক সামিউল আলম কুরসি জানান, পাহাড় থেকে যখন পাথর তোলা হয় তখন সেখানে পাহাড় কর্তন হয়। যেটা আইনে সিরিয়াসলি নিষেধ রয়েছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম হোসেন বলেন, বরাবরের মতোই আমাদের অবস্থান পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে এবং এই জন্য জেলা প্রশাসন কঠোর। এরপরও আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে কিছু দুষ্কৃতিকারী পাথর উত্তোলন করে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে বান্দরবানে পাথর উত্তোলন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিল বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেলা), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, নিজেরা করি, কাপেং ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)।

এরপর অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে বান্দরবান ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয় থেকে নির্দেশনাও জারি করা হয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশনাও কার্যকর হয়নি। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এখনও বিভিন্নস্থানে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন চলছেই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন