বান্দরবানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ঢাবি শিক্ষার্থীর পরিবারে শোকের ছায়া

fec-image

বান্দরবানে পর্যটকবাহী জিপ খাদে পড়ে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমন মৃত্যুতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার বাবা-মা।

রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রামের রৌমারীর মণ্ডলপাড়ায় ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ আনা হলে পরিবার ও স্থানীয়রা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

নিহত জয়নব খাতুন (২৪) রৌমারীর মণ্ডলপাড়ার আব্দুল জলিল মিয়ার মেয়ে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণিতেপড়তেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট ছিলেন।

জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টার দিকে বগালেক-কেওক্রাডং সড়কের দার্জিলিং পাড়া এলাকায় পর্যটনবাহী একটি জিপ খাদে পড়ে জয়নবসহ দুই পর্যটক মারা যান। এ ঘটনায় আরও ১১ নারী আহত হন। হতাহতরা সবাই ঢাকা থেকে ‘ভ্রমণ কন্যা’ নামে একটি ট্যুর গ্রুপের পক্ষ থেকে বেড়াতে এসেছিলেন। গ্রুপটির সদস্য ছিলেন জয়নব।

এ বিষয়ে স্বজনরা জানান, ভ্রমণ করা ছিল তার শখ। পড়াশোনার পাশাপাশি ট্যুরিস্ট সাইটে কাজ করতেন। অসচ্ছল পরিবারের মেয়ে জয়নব কোনো প্রকার কোচিং, টিউশনি ছাড়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। অদম্য মেধাবী এ শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে নিজের পড়ার খরচ চালাতেন। জয়নবের বাবা একজন কাঠ মিস্ত্রি। মেয়েকে উৎসাহ ও সাহস দিতেন। মেয়ের মৃত্যুর খবরে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এছাড়া মেয়ের মরদেহ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা জুলেখা বেগম।

জয়নবের বড় ভাই মেহেদী হাসান কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, “পরিবারের সবার ছোট্ট এবং আদরের বোন এভাবে আমাদের ছেড়ে অসময়ে চলে যাবে তা মেনে নিতে পারছি না। বাবা-মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছে। আমাদের পরিবারের একমাত্র আশার আলো ছিল জয়নব। তাকে ঘিরেই আমাদের স্বপ্ন আবর্তিত হচ্ছিল। পরিবারকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে জয়নব। এসব আশা আকাঙ্ক্ষা আর পূরণ হল না।”

রৌমারী থানার ওসি আব্দুল্লাহ হীল জামান বলেন, রোববার দুপুর ২টায় উপজেলা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে জয়নব খাতুনকে দাফন করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশ বলেন, “আমি পরিবারটির খোঁজখবর নিয়েছি। একজন অদম্য মেধাবী এভাবে চলে যাবে তা কারও ভাবনায় ছিল না। আমরা এলাকার একজন সম্ভাবনাময় মেধাবীকে হারালাম।”

পরবর্তীতে তার পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন