বেইলি রোড ট্র্যাজেডি : এমন মৃত্যু আর কখনো দেখেনি উখিয়াবাসী

fec-image

ঢাকার বেইলি রোড ট্র্যাজেডিতে নিহত সহকারী কাস্টমস কর্মকর্তা ও উখিয়ার মরিচ্যার শাহ জালাল, স্ত্রী ও তাঁদের কন্যা সন্তানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

রোববার (৩ মার্চ) সকাল ১১ টায় তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, এরপর তাঁদেরকে পশ্চিম মরিচ্যা জামে মসজিদের কবরস্থানে তাঁদের তিনজনকেই দাফন করা হয়।

জানাজায় শোকার্ত মানুষের ঢল নামে, উখিয়ার বিভিন্ন স্তরের মানুষ শাহ জালাল, তাঁর স্ত্রী ও কন্যাসন্তানের দাফন শেষ হওয়া পর্যন্ত শোকার্ত মানুষের অপেক্ষা ছিল চোখে পড়ার মতো।

এ সময় শাহ জালালের বন্ধুরা, আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়র তাঁর পরিবারের সদস্যদের অকাল মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।

এ সময় তাঁর বাল্যবন্ধু মিজানুর রহমার বলেন, ছোটকাল থেকেই শাহ জালাল উদ্দিন অত্যন্ত নম্র স্বভাবের ছিলেন, কখনো কারো সাথে বিবাদে জড়িয়েছেন এমন স্মৃতি বন্ধুরা মনে করতে পারছেনা।

শাহ জালালের আরেক বন্ধু আশীষ বড়ুয়া জানান, শাহ জালাল ছোট থেকেই বন্ধুদের কাছে অভিভাবকের মতো দায়িত্ব পালন করেছে।কোনো মনোমালিন্য হলে সে মীমাংসা করে দিতো। তাঁর বন্ধু, স্বজন ও স্থানীয়রা আরও জানায়, এমন মৃত্যু আর কখনো দেখেনি তাঁরা, যেখানে পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

এদিকে জানাজায় শাহ জালালের শ্বশুর প্রকৌশলী মোক্তার উদ্দিন হেলালী ও তাঁর শ্বশুর বাড়ির স্বজনরা তাঁদের জানাজা ও দাফনের সময় উপস্থিত ছিলেন। দাফন শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন শাহ জালালের শ্বশুর মোক্তার উদ্দিন হেলালী।

তিনি বলেন, দেশে এমন নির্মম মৃত্যু আর যাতে না ঘটে সেজন্য সরকারের প্রতি তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শাহজালাল ও তার মেয়ে ফাইরুজের জানাজার নামাজ মরিচ্যা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।এর আগে শাহজালালের স্ত্রীর জানাজা তার বাপের বাড়ি রামুতে পড়ানো হয়। পরে সেখান থেকে মধ্যরাতে শাহ জালালের স্ত্রী মেহেরুন নেছা জাহান হেলালীর মরদেহ মরিচ্যায় তাঁর স্বামী শাহ জালালের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

এর আগে গতকাল রাত থেকেই আত্মীয়স্বজন সকলেই এসেছে উখিয়া মরিচ্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আবুল কাশেমের বাড়িতে। তাঁর পরিবারে শাহজালাল, শাহজালালের স্ত্রী, তিন বছরের ফুটফুটে আদরের নাতনির মরদেহ দেখতে।

আত্মীয়স্বজন,গ্রামবাসী এমনকি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মনুষরাও এসেছেন। সমবেদনা জানাচ্ছেন শাহজালালের বাবা,ভাই-বোনদের।

এর আগে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শনিবার (২মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নিহতদের মরদেহ নিয়ে কক্সবাজার নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তাদের মরদেহ শাহজালালের শ্বশুর বাড়ি রামুর ফতেখাঁরকুলে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে রাত ১০ টায় শাহজালাল ও তার কন্যার মরদেহ নিজ বাড়ি মরিচ্যায় নিয়ে আসা হয় এবং শাহজালালের স্ত্রীর জানাজা বাপের বাড়িতে পড়ানো শেষে তার মরদেহও মরিচ্যায় নিয়ে আসা হয় দাফনের জন্য।

উল্লেখ্য, ঢাকার বেইলি রোডে আগুনে পুড়ে নিহত হন কক্সবাজারের উখিয়ার একই পরিবারের এই তিন সদস্য।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন