বৌদ্ধধর্মীয় মহাসাধক বনভান্তের ৯৬তম জন্মদিন পালিত

Rangamati Bonobante pic01
স্টাফ রিপোর্টার :

মহাপরিনির্বাণপ্রাপ্ত বৌদ্ধধর্মীয় মহাসাধক অরহৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ৯৬তম জন্মদিন রাঙামাটি রাজবন বিহারে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহষ্পতিবার ভোর ৬টায় বেলুন উত্তোলন এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী কর্মসূচি।

ভোরে ভিক্ষুসংঘের প্রাত:রাশ, সকাল ৯টায় পঞ্চশীল প্রার্থনা, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, চীবর দান, উৎসর্গ, পরিত্রাণ পাঠ, বনভান্তের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা, সদ্ধর্ম দেশনা, পিণ্ডদান ও সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ফুল আর বেলুন দিয়ে সাজানো হয় পুরো রাঙামাটি রাজবন বিহার।

সকাল থেকে বিহারে বনভন্তের মমিতে ফুল দিয়ে প্রার্থনা করতে রাঙামাটি জেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হাজার হাজার পূণ্যার্থী ঢল নামে । এসময় ধর্মীয় প্রার্থনায় যোগ দেন রাঙামাটির চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।

বিকালে মহাসাধক বনভান্তের অমৃত বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁর শিষ্যমণ্ডলী পুণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় দেশনা প্রদানের পর প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির এতে প্রধান দেশনা পাঠ করেন।

প্রসঙ্গত, পরিনির্বাণলাভী এ বৌদ্ধ আর্যপুরুষ বনভান্তে ১৯২০ সালের ৮ জানুয়ারি রাঙামাটি সদরের ১১৫ নং মগবান মৌজার মোড়ঘোনা গ্রামের এক নিম্নমধ্যবৃত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মহাসাধক বনভান্তে ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি মহাপরিনির্বাণগত হন। বর্তমানে তাঁর মৃতদেহ সংরক্ষিত রাজবন বিহারে। বনভান্তে স্বর্গীয় হারু মোহন চাকমা এবং স্বর্গীয়া বীরপুদি চাকমার পাঁচ সন্তানের সবার বড়। তার গৃহী নাম ছিল রথীন্দ্র চাকমা।

তিনি ১৯৪৯ সালে প্রব্রজ্যা নিয়ে (বৌদ্ধ ভিক্ষুর বস্ত্র) সংসার ছেড়ে সন্যাসীর জীবন গ্রহণ করেন। সেই থেকে তিনি দীর্ঘ ধ্যান-সাধনা করেন বনে-জঙ্গলে। কঠোর ধ্যান সাধনার ফলে লাভ করেন বৌদ্ধ ধর্মের অলৌকিক শক্তি অরহত্ব করেন বলে তাদের বিশ্বাস। আর এর মধ্য দিয়েই তিনি লাভ করেন মহাপরিনির্বাণ। দীর্ঘদিন বনে-জঙ্গলে ধ্যান সাধনা করায় তিনি ভক্তকূলের কাছে অধিক পরিচিত বনভান্তে নামে। তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুর উপসম্পদা লাভ করেন ১৯৬১ সালে। রাঙামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ হিসেবে আগমণ করেন ১৯৭৪ সালে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন