মহালছড়িতে পাহাড়ী-বাঙ্গালী সংঘর্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা
মুজিবুর রহমান ভুইয়া / জুয়েল দাশ :
খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে চুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ -পিসিপির মহালছড়ি কলেজ শাখার ১ম বর্ষের কাউন্সিল ক্লাশ বন্ধ করে করার দাবী করলে বাঙালী ছাত্ররা আপত্তি করে। আর এ নিয়ে বিতর্কের এক পর্যায়ে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের ছাত্রদের মধ্যে প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত: ১২ জন আহত হয়েছে। এঘটনায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য মহালছড়ি কলেজ বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে আগামীকাল গভর্নিং বডির জরুরী বৈঠক আহবান করা রয়েছে।
আহতেদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলো- মো: মঞ্জুরুল আলম (১৮), মো: হুমায়ূন কবির(১৯), মো: রনি (২০), মো: ফরিদুল ইসলাম (১৮), মো: সোহেল (১৮) মো: কালু (২৬), মিল্টন চাকমা (১৮) বিনীত চাকমা (১৯) প্রতুল খীসা প্রমুখ। আহতদের মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আজ শনিবার মহালছড়ি কলেজে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ-পিসিপির ১ম বর্ষের পুর্ব নির্ধারিত কাউন্সিল হবার কথা ছিল। এ উপলক্ষে সকাল পৌনে দশটার দিকে পিসিপির কর্মীরা কলেজের শ্রেনী কার্যক্রম বন্ধ করে ছাত্র-ছাত্রীদের কাউন্সিল করার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় বাঙ্গালী শিক্ষার্থীরা শ্রেনী কার্যক্রম শেষে কাউন্সিল করার পরামর্শ দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সুত্রপাত হয়। তখন পাহাড়ী ছাত্ররা মো: মঞ্জুরুল আলম নামের এক বাঙ্গালী ছাত্রসহ কয়েকজনকে বেধরক মারধর করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এ ছাত্রকে মারধর করায় বাঙ্গালী ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
সকাল পৌনে দশটা থেকে শুরু করে থেমে থেমে বেলা সাড়ে এগারটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। এসময় পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর করে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে। এসময় উত্তেজিতরা মহালছড়ি উপজেলা জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) অফিস ভাঙচুর করে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে মহালছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর আরিফ ও ক্যাপ্টেন মাসুদ রেজা সিদ্দিকি-এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত হলেও উভয় পক্ষের মধ্যে টান টান উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মহালছড়ি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাদল বরণ বড়ূয়া পাহাড়ী-বাঙ্গালী ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়ে কিছুই জানেন না উল্লেখ করে বলেন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কাউন্সিল হবার বিষয়টি শুনেছি। পিসিপির পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কাউন্সিলের অনুমতি নেয়নি বলেও জানান তিনি।
মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ জোবায়েরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।