মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

শর্করা জাতীয় খাবারের তালিকায় আলু এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মিষ্টি আলু খেতে দারুণ। একটি মিষ্টি আলুতে আছে ১০০ গ্রাম ক্যালোরি, ২ গ্রাম প্রোটিন, ২২ গ্রাম শ্বেতসার, ৩ গ্রাম আঁশ, ০ গ্রাম চর্বি। এছাড়া ১টি মিষ্টি আলু থেকে প্রতিদিনের চাহিদা ২৬০ শতাংশ ভিটামিন এ, ১২ দশমিক ৬ শতাংশ ভিটামিন বি৬, ২৮ শতাংশ ভিটামিন সি। তাই বলা যায় সুস্থ্য সবল থাকতে মিষ্টি আলু হোক প্রত্যহিক খাবার।

মিষ্টি আলুর উপকারিতা

নানা গুণে ভরপুর এই মিষ্টি আলুর গুণগান করে শেষ করা যাবে না। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপকারিতা হলো-

ক্যান্সার প্রতিরোধ

শুধু মিষ্টি আলুই নয়, সম্পূর্ণ উদ্ভিদটিই ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে। রক্তবর্ণের মিষ্টি আলুগুলোতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং টিউমার প্রতিরোধী উপাদান, যা ভেষজ ওষুধ হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। মিষ্টি আলুর খোসাও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এই মিষ্টি আলুর খোসা মাথা, ঘাড়, স্তন, মলাশয় এবং ডিম্বাশয়ের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি রহিত করে এ সকল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

হৃদপিণ্ডের যত্ন

হৃদপেশির প্রসারণশীলতা বা টান ঠিক রাখতে মিষ্টি আলু খুবই কার্যকর বলে গবেষণায় জানা গিয়েছে। ইঁদুরের উপর গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মিষ্টি আলুর ‘ভেসোরিলাক্সেশন ম্যাকানিজম অফ অ্যাকশন’, বা হৃদপিন্ডের প্রকোষ্ঠগুলোর সংকোচন-প্রসারণশীলতা ভাল রাখতে অ্যাসিটাইলকোলিনের মতোই কাজ করে মিষ্টি আলু।

 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

নামেই যার মিষ্টি জড়িয়ে রয়েছে, তা কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করবে এমন প্রশ্ন মনে আসা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু বহুকাল আগে থেকেই ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি আলু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। একটি গবেষণা করা হয়েছিল ডায়াবেটিক রোগীদের উপর। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ১৪০ জন ডায়াবেটিস রোগীকে প্রতিদিন ৪ গ্রাম করে মিষ্টি আলু খেতে বলা হয়। ৩-৫ মাস পর দেখা গেল তাদের ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে! মিষ্টি আলুর পাতাও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

মিষ্টি আলু গ্রহণের একটি বড় উপকারিতা হলো এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ইঁদুরের উপর গবেষণায় দেখা গিয়েছে মাত্র সাতদিন মিষ্টি আলু গ্রহণ করেই সেগুলোর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও ভাল কাজ করছে!

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখা

মিষ্টি আলুতে থাকা ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও মিষ্টি আলুতে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন, যা চোখের রেটিনার রঞ্জক কোষের বৃদ্ধি ও রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

 

ওজন নিয়ন্ত্রণ

খেয়েও ওজন কমানো যায়– ব্যাপারটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। মিষ্টি আলুতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকলেও রয়েছে জটিল কার্বোহাইড্রেট, যা পুষ্টিগুণে পূর্ণতা দেয়। এতে রয়েছে স্থূলতা নিরাময়কারী উপাদান, যা দেহে চর্বি জমতে দেয় না।

কীভাবে খাবেন?

এতো পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্যটি কীভাবে খেলে পুষ্টি উপাদানগুলো ঠিকঠাকভাবে পাবেন, তা জানাটা খুব জরুরি। রান্না করে বা শুধু সেদ্ধ করে মিষ্টি আলু খাওয়া যায়। তবে যেভাবেই খাওয়ার উপযোগী করুন না কেন, বেশিক্ষণ সময় নেয়া যাবে না। সেদ্ধ করা মিষ্টি আলুতে সবচেয়ে ভালোভাবে পুষ্টি উপাদানগুলো পাওয়া যায়।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *