মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধে হস্তক্ষেপের আহ্বান মাহাথিরের

f23d46cafd447928cc4351263fe052eb-3_84328
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চলছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। এটি বন্ধে মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর হস্তক্ষেপ করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

শুক্রবার কুয়ালালামপুরে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

মিয়ানমার থেকে নারী, শিশুসহ হাজারো রোহিঙ্গা সম্প্রতি মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের দিকে পাড়ি জমায়। মানব পাচারকারীদের শিকার হওয়া ছাড়াও দমনপীড়নের কারণে তারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের গভীর জঙ্গলে সম্প্রতি অভিবাসনপ্রার্থীদের বেশ কিছুসংখ্যক কবরের সন্ধান পাওয়া গেলে সারা বিশ্বে হইচই পড়ে যায়। এই প্রেক্ষাপটে ‘রোহিঙ্গাদের দুর্দশা-২: মানবতাবিরোধী অপরাধ’ শিরোনামের ওই সম্মেলনে এ অঞ্চলের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব মাহাথির বলেন, ‘এটি শুধু নৌকার সমস্যা নয়।’ কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয় এমন বিবেচনায় আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর চুপ করে থাকার সমালোচনা করেন তিনি।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বৈষম্য ও ‘গণহত্যার’ বিষয়ে ইঙ্গিত করে মাহাথির বলেন, ‘হতে পারে এটি কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু জনগণের ওপর এমন নিষ্ঠুর অত্যাচার করার অধিকারও কোনো দেশের নেই।’

আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পবিত্রতা সম্পর্কে আমাদের প্রচলিত ধারণা পাল্টাতে হবে। আর মালয়েশিয়ার সরকারের উচিত হবে, রোহিঙ্গাদের বিষয়টি আসিয়ানে তোলা। গণহত্যা চালায়, এমন কোনো দেশ আসিয়ানের সদস্য থাকুক, আমরা তা সমর্থন করতে পারি না। এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ আমাদের করতেই হবে।’

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের বিষয়টি আসিয়ানের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে তোলারও পরামর্শ দেন মাহাথির। সেই সঙ্গে দেশটিকে একঘরে করতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জাতিসংঘে তুলতে পারি.. দেশটিকে (মিয়ানমার) একঘরে করা উচিত।’

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চে অন্তত ২৫ হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিকে পাচারকারীরা নৌকায় করে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সরকার বলছে, তারাও চায় না হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করতে যাক। কিন্তু রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারের নীতির কোনো পরিবর্তন করা হবে না।

চলতি সপ্তাহে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের উপ-মহাসচিব ইউ জাউ তাই এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাঙালিদের (রোহিঙ্গা) বিষয়ে সরকারের নীতির কোনো পরিবর্তন করা হবে না।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি নেই। দেশটির সরকার তাদের ‘বাঙালি’ বা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে দাবি করে।

গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী।

সূত্র: মালয়মেইল অনলাইন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন