মিয়ানমারে সামরিক সহযোগিতা বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে মার্কিন কংগ্রেসে এক বিল উত্থাপিত হতে যাচ্ছে। এতে মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর রোহিঙ্গা নিধন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ সংকট সমাধানের যে আশা জাগিয়েছিলো তা ভুল প্রমানিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের সমালোচনা করার পর অবরোধ দূরের কথা, বরং তাদের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সংবাদ সংস্থা এপি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সিনেটে প্রতিরক্ষা ব্যয় বিষয়ক একটি বিল উত্থাপিত হতে যাচ্ছে, যার ফলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। এই বিলের খসড়ায় সামুদ্রিক নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা এবং মানবপাচার রোধে দুই দেশের একত্রে কাজ করার কথা বলা হয়েছে।

রাখাইনে জনগণের ওপর কী ঘটছে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সচেতন এবং সেখানে যা ঘটছে তাতে তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন বলে শনিবার সংবাদ প্রকাশিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে মুখপাত্র হিদার নোয়ার্টকে উদ্ধৃত করে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি তারা সহিংসতা প্রতিরোধ এবং স্থানীয় লোকদের সুরক্ষা দেয়ার আহ্বান জানায়।

মানবাধিকার লংঘনের জন্য মিয়ানমারের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি এ ব্যাপারে কূটনৈতিক সংলাপ চালিয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন আমেরিকার ডানপন্থী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের এশিয়া প্রোগ্রাম এডিটর ওয়াল্টার ল্যামেন। বিষয়টি ‘নির্মম বার্তা দিচ্ছে’ বলেও বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর এই সহিংসতাকে জাতিগত নিধন বলেই উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের এবং তার আইনপ্রণেতারা অং সান সু চি’র সরকারের উপর কোন অবরোধ আরোপে বা জোরালো কোন চাপ প্রয়োগে প্রস্তুত নয়।

তবে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাবিধকার গ্রুপগুলো। জাতিসংঘের হিসেবে, আগস্টের ২৫ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৯০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার পক্ষে ভিভিয়ান ট্যান বলেন, নতুন আরও যারা আসছে তারা রাস্তার পাশে বা যেখানে জায়গা পাচ্ছে সেখানেই কোনরকমে একটি থাকার ব্যবস্থা করছে।

এর আগেও মিয়ানমারে গণহত্যা সংঘটনের ব্যাপারে সতর্ক করেছিলো ইউএস হোলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম। তাদের অভিমত, গ্রামগুলো ও ঘরবাড়িগুলো যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে তাতে বুঝা যায় তা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের উপর জাতিগত নিধনের প্রচেষ্টা। রোহিঙ্গারা যাতে আর নিজেদের বাসভূমিতে ফিরে আসতে না পারে তার জন্যই এমনটি করা হচ্ছে।

শরণার্থীদের জন্য কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, জীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় সাহায্যও রাখাইনে নিতে বাধা দিচ্ছে সেনাবাহিনী, যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন