মুকুল চাকমা হত্যাকারীদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব

মুকুল চাকমা

॥ মোঃ মনিরুজ্জামান মনির ॥

“জীবহত্যা মহাপাপ, অহিংসা পরম ধর্ম”- গৌতম বুদ্ধের এই মহামূল্যবান বাণীটি আমরা সবাই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সবাই আমরা অহিংসার আদর্শে বিশ্বাসী হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের কতিপয় উপজাতীয় নেতা ও তাদের দল জেএসএস ও ইউপিডিএফ এই আদর্শকে অমান্য করে চলেছে। তাদের কাছে দলীয় ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য প্রতিপক্ষ যেই হোক, তাকে হত্যা করতে পারাটাই যেন বিরাট কৃতিত্বের ব্যাপার। সেখানে বৌদ্ধ কি বাণী দিল, তাতে কিছু যায় আসে না। অবশ্য, বৌদ্ধ ধর্মীয় বড় বড় অনুষ্ঠানগুলোতে আবার তারাই থাকে সর্বেসর্বা। কি বুদ্ধ পূর্ণিমা, কি কঠিন চীবরদান, বনভান্তের কোন অনুষ্ঠান, অথবা বৈসুক, বিজু, সাংগ্রাই- যাই হোক না কেন সেখানে দেখা যায় ঐ সব আঞ্চলিক দলীয় নেতারাই থাকেন সবার শীর্ষে। অথচ, বাস্তবে তারা কতটুকু বৌদ্ধধর্মীয় আদর্শ পালন করেন, তার হিসাব ক’জনে রাখে?

গত ২১ সেপ্টেম্বর দৈনিক নয়াদিগন্তের পৃষ্ঠা-৪ এর ৭ম কলামে ছবিসহ রাঙামাটি সংবাদদাতা লিখেছেন, “রাঙামাটিতে উপজেলা চেয়ারম্যান বড় ঋষি চাকমা জেলহাজতে। সাবেক সেনা সার্জেন্ট মুকুল চাকমা অপহরণ মামলায় রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে রাঙামাটির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্যাট আদালত। ২০/০৯/২০১৬ইং মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টেট রোকন উদ্দিন কবিরের আদালত এ নির্দেশ প্রদান করেন।

মুক্তমত

উচ্চ আদালত থেকে নেয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতে খুনের আসামীরা নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। যদিও চাকমাদের মধ্যে খুন-খারাবি, মারামারি, কাটাকাটি, অসামাজিক কার্যকলাপ ইত্যাদি আদিকাল থেকেই চলে আসছে, তথাপি বাইরের কোট-কাচারিতে এসব অভিযোগ সহজে পৌঁছতে পারে না। উপজাতিদের সমাজপতি, হেডম্যান, কারবারী, দেওয়ান, খীসা, তালুকদার, লারমা নেতা ইত্যাদিকে ডিংগিয়ে সরকারের থানা-পুলিশ, আইন-আদালতে যাওয়ার সুযোগ একেবারেই নাই।

অবশ্য, এটা নিয়ে কোন কোন উপজাতি নেতা দারুণভাবে গর্ববোধ করে থাকেন। তবে ‘সর্ষের মধ্যেও যে ভূত’ থাকে। উপজাতীয়দের মধ্যেও পিছিয়ে পড়া অনেক নর-নারী ধুকে ধুকে মরছে, যারা মানবাধিকার বঞ্চিত ও সমাজপতিদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছেন, তাদের খোঁজখবর কেউ রাখে না। বড় ঋষি চাকমা প্রভাবশালী জেএসএস নেতা এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান। তদীয় সঙ্গীরা সবাই জেএসএস নেতা এবং অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত ক্যাডার লালন করে থাকেন। ফলে সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট মুকুলকে অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা, যা কিছুই করা হউক না কেন, অসামীদের বিচার কে করবে?

কল্পনা চাকমা নাটকের শিকার হয়ে লে. ফেরদৌস যে কঠিন পরিস্থিতির ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছিলেন, সে কথা অবশ্যই সমগ্র জাতির জানা আছে। সার্জেন্ট মুকুল অবসর জীবন নিয়েও সুখে থাকতে পারলেন না। তাকে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা/সোর্স আখ্যা দিয়ে নির্যাতন ও হত্যা করা হল। অথচ বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদছে। কেন? বাঘাইছড়ি থানায় মামলা করতে গেলে শুনতে হয় নানারূপ সতর্কবানী- “ওরা হল এলাকার সম্রাট! ওদের নামে মামলা করা চলবে না। যাও- চুপচাপ থাকো। সময় হলে থানায় ডাকা হবে। তখন বলবো-কি করতে হবে”। নিহত সার্জেন্ট মুকুলের স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান থানায় মামলা করতে গেলে এভাবেই তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

অবশ্য, এর আগেও পাহাড়ে বহু বাঙালি ও উপজাতিকে হত্যা করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও বাঘাইছড়িতে সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লাল থাংগা পাংখুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার বড় অপরাধ ছিল- সে জুমল্যান্ড আন্দোলনে বিশ্বাস করতো না। পাংখুদেরকে বাংলাদেশ প্রেমিক করতে সে নানারূপ কর্মসূচী পালন করত। সাজেকের পাংখু অধ্যুষিত এলাকায় চাকমা ও ত্রিপুরাদের দ্বারা ভূমি দখলের বিরুদ্ধেও সে ছিল সোচ্চার।

এছাড়া, বাঘাইছড়ি থানার পাকুয়াখালীর গহীন অরণ্যে ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শতাধিক বাঙালি কাঠুরিয়া/শ্রমিককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছিল পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা। এই বাঘাইছড়িতেই নব্বই দশকে শেল পেট্রোলিয়াম কোম্পানীর ৬ জন বিদেশী প্রকৌশলীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ বাবদ ২২ কেজি স্বর্ণ এবং এক কোটি রূপী আদায় করেছিল জেএসএস ক্যাডাররা। উপেন্দ্রলাল চাকমার মাধ্যমে সান্টু লারমার কাছে উক্ত মুক্তিপণের অর্থ পৌঁছে দিয়েই বিদেশী প্রকৌশলীদের মুক্ত করা হয়েছিল (এরশাদের আমলে)।

বড় ঋষি চাকমাদের প্রভাব প্রতিপত্তির কাছে স্থানীয় বাঙালি বা উপজাতি কেউই ধারে কাছে ভিড়তে পারেন না। যারা জুমল্যান্ড চাইবেনা, যারা জেএসএস কিংবা ইউপিডিএফ করবে না, যারা চাঁদাবাজী, মুক্তিপণ, গুম হত্যায় বিশ্বাসী না এবং যারা বাংলাদেশের অখন্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী তারাই মূলতঃ এসব অপহরণ, গুম, হত্যা, মুক্তিপণ, চাঁদাবাজি হয়রানি ও নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন।

অথচ সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন তাদের প্রটেকশনের জন্য কিছুই করছে না। উপজাতীয় সামাজিক বিচার, নিজস্ব ব্যাপার, প্রথাগত ভূমি অধিকার, শান্তিচুক্তি ইত্যাদির কথা বলে বরাবরই পার পেয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রদ্রোহী উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। অথচ- রাষ্ট্র যাদের রক্ষা কবচ, তাদের রক্ষায় রাষ্ট্রের মুখ্য ভূমিকা নাই কেন?

পাবর্ত্য চট্টগ্রামের জুমল্যান্ড আন্দোলনে সবার সমর্থন নাই। যারা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ প্রেমিক হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন, তাদের পাশে সমগ্র জাতিকে সমর্থনের ডালা নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে। সম্প্রতি বাঘাইছড়িতেই এক সমাবেশে সান্টু লারমা রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারকে বলেছেন- “জুন্ম জাতির কুলাঙ্গার”! অবশ্য স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এজন্য তাদেরকে জানাই অভিনন্দন। কেননা, শান্তিচুক্তি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউকে গণহত্যার লাইসেন্স দেন নাই। শান্তিচুক্তির কোন শর্তে হত্যা, খুন, চাঁদাবাজী, গুম, মুক্তিপণ, অপহরণ, নির্যাতন করলেও তার বিচার করা যাবে না- এ ধরনের গ্যারান্টি দেওয়া হয় নাই।

স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জুন্ম জাতির দুশমন, দুলাগোষ্ঠী নিপাত যাক, দালাল, সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে বহু বড় বড় উপজাতীয় নেতাকেও তথাকথিত জুন্ম লিবারেশন আর্মি (শান্তিবাহিনী) হত্যা করেছে। উপজাতীয় নেতা চাবাই মগ, উরিমোহন ত্রিপুরা, শান্তিময় দেওয়ান, চুনীলাল চাকমা, হেডম্যান বংকিম দেওয়ান, কিনা মোহন চাকমা, শান্তিময় দেওয়ান, অনজনা চাকমা, রেমন্ড লুসাই, মেজর পিওরসহ অসংখ্য উপজাতীয় নেতাকে তারা হত্যা করেছে। কোনো হত্যারই বিচার হয়নি। মূকুল চাকমা হত্যাকারীরা যেন শাস্তি পায়। তার এতিম কন্যা সন্তান, বিধবা স্ত্রীকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিনা মহোন চাকমাসহ অন্য হত্যাকারীদের মতো তারা যেনো পার পেয়ে না যায়। অন্যদিকে জুমল্যান্ড আন্দোলনের প্রতিপক্ষ হিসেবে ৩৫০০০ বাঙালি শিশু-কিশোর, নর-নারী, আবালবৃদ্ধ বনিতাকে হত্যা করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকার ফসলাদি, ঘরবাড়ি, পশু-পাখি বধ করেছে খুনী শান্তিবাহিনী।

লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকার, সাপ্তাহিক পার্বত্য বার্তা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাঙামাটি জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল রশিদসহ জানা অজানা হাজার হাজার বাঙালিকে গুপ্ত হত্যা, ব্রাশফায়ার ও টাইম বোমার আঘাতে হত্যা ও পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে, তার ইয়ত্তা নাই। অথচ- এরপরও সরকার তাদেরকে শুধু ছাড়ই দিয়ে চলছেন। মনে হয়, ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা সরকারেরও নাই। কিন্তু কেন?

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ইত্যাদির শিক্ষা কি? যারা বাংলাদেশের হৃদপিন্ড কেড়ে নিতে চায়, যারা দেশের এক দশমাংশ ছিনিয়ে নিতে চায়, তারা জাতির বন্ধু হতে পারে না, তারা বাংলার বিভীষণ- গণদুষমন, স্বঘোষিত মীর জাফর এবং যুদ্ধাপরাধী।

রাঙামাটির পিতৃহারা নমিশা চাকমা এবং স্বামী হারা সাধনা চাকমারা ন্যায় বিচার প্রত্যাশী। তাদের আপনজন সার্জেন্ট মুকুল চাকমা আমাদেরই নিরাপত্তা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক। তাকে হত্যা/অপহরণকারী বড় ঋষি চাকমা, প্রভাত চাকমা, বিস্তার চাকমা, কাকলী বাবুরা ইত্যাদিরা বিচারের উর্ধ্বে নয়। স্থানীয় সামাজিক বিচারের কথা বলে এই অপরাধকে ঢেকে ফেলা যাবে না, খুনীদের আড়াল করা যাবে না। এটি একটি হত্যা মামলা। এর অবশ্যই ন্যায় বিচার হতে হবে।

এছাড়াও বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানেও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ করার অপরাধে জেএসএস ক্যাডাররা স্থানীয় উপজাতীয় নেতাদেরকে অপহরণ করে চলছে। কোথাও সামান্য অপরাধে খোঁড়া যুক্তিতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পাছা পরিষদ) নামধারী সদস্যরা উপজাতীয় মেয়েদেরকে শাস্তি হিসেবে নিজেরাই বিচার করে ধর্ষণ/নির্যাতন/জরিমানা করে চলেছে। এর শেষ হবে কবে?

দুঃখের বিষয় হলোঃ পুলিশ যদিও দুই চার জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তার বিরুদ্ধে জনসংহতি সমিতি দুই তিন দিন হরতাল ডেকে অন্যায়কারীদের পক্ষ নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। বান্দরবানে, বিলাইছড়ি এবং খাগড়াছড়িতে রাষ্ট্র বিরোধী কাজে লিপ্ত এবং হাতে নাতে ধৃত জেএসএস এবং ইউপিডিএফ নামধারী সন্ত্রাসী ক্যাডারদের মুক্তির দাবীতে তারা মিছিল এবং হরতাল ও করেছে।

স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে বান্দরবান এবং রাঙামাটিতে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা আওয়ামী ও বিএনপির পক্ষ থেকে অনেক পাহাড়ী প্রার্থীকে নমিনেশন ফর্ম পর্যন্ত জমা দিতে দেয় নাই। তাদের অনেককে অপহরণ এবং নির্যাতনও করা হয়েছে। অথচ সন্তু বাবুরা বলে যাচ্ছেন তাদের কোন অধিকার সরকার দিচ্ছে না। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে পাহাড়ে শান্তির নহর বইতে থাকবে। কি অপরূপ তামাশা?

ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বাঙালিদেরকে চা বাগান, আনারস বাগান, সেগুনের চারা ইত্যাদি কোটি কোটি টাকার বাগান রাসায়নিক পদার্থ ঢেলে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারও কোন বিচার হয় নাই। বাঙালিরা আজ পাহাড়ে ঘরের মালিক হলেও ভূমির মালিকানা পাচ্ছে না। ভূমি কমিশন আইন-২০১৬ নামক যেনো একটি পারমাণবিক অস্ত্র বাঙালিদের বিতরণের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে আলাদা কোন ভূখণ্ড নয়। এটি আমাদের দেশেরই এক ও অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমরা বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান-মুসলমান, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, পাংখু, লুসাই, বোম, রবিদাস, জলদাস, তনচঙ্গা, মুরং, মনিপুরী, অহমীয়া, গুর্খা ইত্যাদি সকল জাতি-উপজাতি, সম্প্রদায় বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী সবাই মিলে মিশে বসবাস করতে চাই। কিন্তু নিজেদের আচার অনুষ্ঠান প্রথাগত ভূমি অধিকার কিংবা নিজস্ব সামাজিক বিচার-আচার, আইন-শালিশ ইত্যাদির অজুহাত দেখিয়ে কাউকে অপহরণ/হত্যা করে আইনের হাত থেকে ছুটে যাবার কোন রাস্তা বাংলাদেশের সংবিধানে নাই। পাহাড়েও নাই। বড়ঋষি বাবুরা বাঘাইছড়ির সম্রাট (?) হলেও যাদের কাছে আশ্রয় প্রশ্রয় পাচ্ছেন, তাদের উচিত আইনের গতিতে নিজেদেরকে গতিশীল করে তোলা।

“দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন” বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মূলমন্ত্র। কিন্তু বাঘাইছড়ি থানা কর্তৃপক্ষ সার্জেন্ট মুকুল চাকমাকে অপহরণ এবং হত্যার পর এক মাসেরও বেশি সময় তার পরিবারকে ঘুরিয়েছেন। সামান্য একটি জিডি নিতেও পরিবারটিকে নিরাপত্তা দেয়া হয় নাই। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের পুলিশ বাহিনীকে এ ব্যাপারে আরো বেশি সাহসী ভূমিকা রাখার আবেদন জানাই।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বাংলাদেশপ্রেমিক উপজাতিদের হত্যাসহ সকল রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র বিদ্রোহ দমনে রাষ্ট্র পক্ষ যেন আরো সজাগ হন, সাহসী হন, সংবিধান রক্ষক হন, অসহায় উপজাতীয় নরনারীর পাশে দাঁড়ান, পাহাড়ে মানবাধিকার চর্চা যেন আরো জোরদার হয়, আমরা সেই প্রত্যাশা করছি। আমরা মনে করি, উপজাতীয় নেতাদের কথায় নয়, উপজাতীয় জনগনের মানবাধিকার রক্ষার মাধ্যমেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। বাংলাদেশ চিরজীবি হউক।

লেখকঃ মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন এবং সাবেক ডেপুটি কমান্ডার, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাঙামাটি জেলা ইউনিট, রাঙামাটি।


♦ মুক্তমতে প্রকাশিত লেখার সকল তথ্য, অভিমত ও বিশ্লেষণ একান্ত লেখকের নিজস্ব।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন