রাঙামাটিতে বিজিবি’র ৪০তম প্রতিষ্ঠার্ষিকীতে একসাথে সন্তু লারমা-দীপংকর-বৃষকেতু

rangamati-bgb-pic-01-copyরাঙামাটি প্রতিনিধি:

পার্বত্যাঞ্চলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কার্যক্রম খুবই প্রশংসনীয় উল্লেখ করে আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্যাঞ্চলের যে বহুমুখি বাস্তবতা সেই বাস্তবতা উপলব্ধি করে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিজিবি কাজ করে চলেছে। পরস্পরের মধ্যে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাঙামাটি সেক্টরের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সেক্টর সদরের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত প্রীতিভোজ শেষে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। সন্তু লারমা বলেন, বিজিবি’র সদস্যরা পার্বত্যাঞ্চলকে বিশেষ অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করে যেভাবে কাজ করছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এছাড়াও বিজিবি নিঃসন্দেহে জনগনের কল্যানেই কাজ করে চলেছে। সন্তু লারমা বিজিবি’র উত্তরোত্তর উন্নতি ও সফলতা কামনা করেন এবং জনহিতকর কাজের জন্য বিজিবি রাঙামাটি সেক্টরকে ধন্যবাদ জানান।

মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত প্রীতিভোজের পূর্বে বিজিবি রাঙামাটি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো: আশরাফুল ইসলাম আগত সকল অতিথিদের বরণ করে নেন। এরপর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার,সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মাহবুবুল আলম, এনডিসি, পিএসসি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মো: নুরুল হুদা, ডিজিএফআই অধিনায়ক কর্নেল মো: এমদাদ উল্লাহ ভুঁইয়া, পিএসসি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শহীদ উল্লাহ, রাঙামাটি পৌর মেয়র মো: আকবর হোসেন চৌধুরী।

এছাড়াও  এএসইউ অধিনায়ক লে: কর্নেল মিঞা মো: হেমায়েত হোসেন, ২২বিজিবি বরকল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: কর্নেল মো: আলাউদ্দীন আল-মামুন, ২৫বিজিবি ছোট হরিনা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: কর্নেল মো: শাহাবুদ্দীন ফেরদৌস, নানিয়ারচর জোন কমান্ডার লে: কর্নেল এম ইমরান হামিদ, পিএসসি, রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মাইনুল ইসলাম প্রমূখ। প্রীতিভোজের পূর্বে বিজিবি রাঙামাটি সেক্টরের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন সেক্টরের অতিরিক্ত পরিচালক অপারেশন মেজর মো: ফজলে রাব্বি পিবিজিএম। সন্ধ্যায় বিজিবি’র হ্যালিপ্যাডে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের ১ নভেম্বর যাত্রা শুরু হয় বিজিবি রাঙামাটি সেক্টরের। শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকায় মারিশ্যা ও কাপ্তাই এ ২টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এই সেক্টর। এরপর ১৯৭৯ সালে বরকলে ১টি ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দীর্ঘদিন যাবৎ তিনটি ব্যাটালিয়ন নিয়ে এই সেক্টর এর কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। ১৯৯৪ সালে সেক্টর সদর দপ্তর বর্তমান অবস্থানে (ঝগড়ার বিলে) স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮৮ সালে ছোটহরিণায় এবং ১৯৯৪ সালে রাজনগরে ২টি ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অত্র সেক্টর অরব্যাট এ সংযোজিত হয়। বর্তমানে অত্র সেক্টরের অধীনে ৪টি ব্যাটালিয়ন যথাক্রমে ১৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন ২৪ মে ২০১৩ তারিখে ওয়াগ্গাছড়া, কাপ্তাই, ২২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে বরকল, ২৫ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে ছোটহরিণা এবং ৩৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন ২৬ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে রাজনগরসহ ১৭৫ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার দায়িত্ব পালন করছে।

সেক্টরের শুরুর লগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ৩৬ জন সেক্টর কমান্ডার অত্যন্ত দক্ষতার সাথে রাঙামাটি সেক্টরের নেতৃত্ব প্রদান করেন। ইতোমধ্যে এই সেক্টরের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নে সাতটি নতুন বিওপি (সাউথলছড়া, বদিপাড়া, ঘাসকাপাছড়া, করল্লাছড়ি, ভূয়াটেক, উলুছড়ি এবং প্যারাছড়া) স্থাপিত হয় এবং চলতি বছরের মধ্যে আরো সাতটি নতুন বিওপি (কিয়ংপাড়া, মরাথেগা, মাইল্লাছড়াপাড়া, ছোটকরদিয়া, বরকরদিয়া, বগাখালী এবং দেবাছড়ি) স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়াও আরো তিনটি বিওপি (দুমদুমিয়া, পানকাটা, অদয়াবাবছড়া) নির্মানের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন