রাঙামাটিতে মারমা তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠেছে জলোৎসবে
স্টাফ রিপোর্টার:
রাঙামাটিতে সাংগ্রাইংকে কেন্দ্র করে মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠেছে জলোৎসবে। বৃহষ্পতিবার সকাল ১১টায় মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসাস) এর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি।
মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসাসের) এর উপদেষ্টা উথিন চিং মারমার সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, তিন পার্বত্য সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেলারেল মোঃ সানাউল হক পিএসসি, ডিজিএফ আই কর্নেল ইমদাদুল হক ভুইয়া (ইমরান) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান প্রমুখ।
দিনব্যাপী জলকেলী উৎসবের উদ্ধোধন করার পর মারমা তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে আনন্দে উৎসবে মেতে উঠেন। উৎসবে অংশ নিতে হাজার হাজার মারমা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ নেন। দিনব্যাপী উৎসবটি যেন সকল সম্প্রদায়ের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক, বিষু-কে কেন্দ্র করে প্রতি বছর মারমা সম্প্রদায় কেন্দ্রীয়ভাবে পুরাতন বছর বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে নিতে এই ঐতিহ্যবাহী জলকেলী উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেন, বর্তমান সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনির মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিসমূহের সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশে আইন প্রণয়নের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠিসমূহ তাদের নিজ নিজ ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ঐতিহ্য সংস্কৃতি সংরক্ষণে সুযোগ পাচ্ছে। অন্যদিকে ২০১৭ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক, বিষু উপলক্ষে চার দিনের সরকারী ছুটি কার্যকর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি করেছেন। তাছাড়া চুক্তির বেশিরভাগ ধারাও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাকি যেসব ধারা বাস্তবায়ন করা হয় নি তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে ভূমি সমস্যা। ভূমি সংক্রান্ত বেশকিছু জটিলতা রয়েছে। তার জন্য ভূমি কমিশন কাজ করছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের বিল সংশোধনের জন্য চেষ্টা চলছে। আশা করি আগামী সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করা হবে।
আলোচনা শেষে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ফিতা কেটে ও পানি ছিটিয়ে জল উৎসব উদ্বোধন করেন। এসময় মারমা তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে ও নেচে গেয়ে এ উৎসবে মেতে উঠে। পুরাতন বছরের সকল দুঃখ, গ্লানি ধুয়ে মুছে দেয়ার জন্য এ জল উৎসব পালন করা হয়ে থাকে।