রাজস্থলীতে ভয়াবহ বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি, খোলা হয়েছে ৭টি আশ্রয়কেন্দ্র

fec-image

রাঙামাটি রাজস্থলীতে থেমে থেমে চতুর্থ দিন পর ৫ম দিনে প্রভাতে স্মরণকালের ভয়াবহ বর্ষণের সাথে মেঘের গর্জন হয়েছে। রবিবার এ প্রবল বৃষ্টিতে নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতা ও বহু মৎস্য চাষ ভেসে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুকুর-জলাশয়। ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অনেকের বাড়ি ঘরে উঠানে পানি উঠে যাওয়ায় দুর্ভোগ পড়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় পানি নিষ্কাশনে নেট-পাটা অপসারণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ। গত বৃহস্পতিবার থেকে লঘুচাপের প্রভাবে এ উপজেলার সবখানে টানা ৪ দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার পর ৫ম দিনে ভোরে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। এতে সবুজ প্রকৃতি সতেজতা ফিরে পেলেও ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতিসহ দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে একাধারে প্রবল বৃষ্টি হয়। এতে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের নীচু এলাকায় জলাবদ্ধতা, রাস্তা-ঘাঠ ও মংস্যঘেরসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, প্রবল বৃষ্টিতে ইউনিয়নের বহু মৎস্যঘের ভেসে গেছে। কাঁচা রাস্তা নষ্ট হয়ে চলাচলে অনুপযোগী হওয়াসহ অধিকাংশ দরিদ্র পরিবারের মাটির ঘর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বাজারে দোকান পাটে পানি উঠে ব্যবসাবাণিজ্য মন্দা দেখা দিয়েছে।

বাঙালহালিয়া বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মনচুর বলেন, বাজারে অনেক ব্যবসায়ীর দোকানে পানি প্রবেশ করে মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বর্ষণে কাদামাটি ও নোংরা পানিতে বাজারে আসা ক্রেতাসহ দোকানীদের চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। ইউনিয়নের পাশাপাশি বাজার এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। টানা বৃষ্টিতে যে পানি জমেছে তা নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই।

শিক্ষার্থী সুইমং মারমা জানান, বাড়ির সামনে জমে থাকা পানি পাড়ি দিয়ে স্কুল কলেজে যেতে হচ্ছে। উপজেলার স্কুলের আশপাশ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

বাঙালহালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আদোমং মারমা জানান, যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সম্ভাবনা ছিলো সেসব এলাকার খালের নেট-পাটা অপসারণ আগেই করা হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষতি হলেও পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী নেট-পাটা অপসারণ কয়েকদিন আগে থেকে অব্যাহত আছে। যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, এসব এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। অনেক জায়গায় ড্রেনের কোনো জায়গা না রেখেই প্রাচীর দিয়ে পাঁকা বাড়ি-ঘর নির্মাণ করায় বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তনু কুমার দাশ জানান, বর্ষার সাথে সাথে খালের নেট-পাটা অপসারণসহ পানি নিষ্কাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউনিয়নের সকল চেয়ারম্যানদেরকে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় মাইকিং করা হয়েছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগে আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। অপর দিকে জনগণের নিরাপত্তার জন্য ৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বর্ষণ, রাজস্থলী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন