শান্তকে ছাড়াই আজ পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ

fec-image

আফগানিস্তানের বিপক্ষে শতরানের ইনিংস খেলার মাঝপথেই ক্র্যাম্পে আক্রান্ত হয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রান নেয়ার সময় পড়ে গিয়ে রান আউটের শিকার হওয়া শান্তর পায়ের পেশি ছিঁড়ে গেছে। ২ ম্যাচে ১৯৩ রান করে এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শান্তকে ছাড়াই আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

পাকিস্তান এই মুহূর্তে আইসিসির ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ আর হারিস রউফদের নিয়ে গড়া পাকিস্তানের পেস আক্রমণ বিশ্বেরই অন্যতম সেরা। আগের ম্যাচে শাহিন যেভাবে রোহিত শর্মাকে বোল্ড করেছেন, তারপর ওয়াসিম আকরামসহ অনেক কিংবদন্তিই বলতে শুরু করেছেন যে এখন শাহিনই সাদা বলে বিশ্বের সেরা বোলার। ইনিংসের গোড়ার দিকে উইকেট তুলে নেওয়াটা অভ্যাসে পরিণত করেছেন শাহিন। অথচ তার বল সামলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতির সুযোগ একদমই পাচ্ছেন না সদ্যই দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া লিটন দাস। লাহোরের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুঁই, তীব্র গরমে অনুশীলন বাতিল করেছে বাংলাদেশ দল। পার্ল কন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে তাই কোথাও বের হননি ক্রিকেটাররা, হয়নি কোনো সংবাদ সম্মেলনও।

অন্যদিকে পাকিস্তান দল ঠিকই অনুশীলন করেছে কাল। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বোলিং করেও ব্যাটিং না পাওয়া বাবর-রিজওয়ানরা নিশ্চয়ই আজকের ম্যাচের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন। অনুশীলন শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পেসার নাসিম শাহ বলেন, ‘পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার কন্ডিশন পুরোপুরি আলাদা। আমরা আসলে টেস্ট সিরিজ ও এলপিএল খেলে শ্রীলঙ্কার কন্ডিশনের সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছিলাম। তবে ওয়ানডে ম্যাচে বোলিং লাইনআপে শৃঙ্খলা বজায় রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বিশ্বের যেখানেই খেলা হোক না কেন।’ মুলতান থেকে পাল্লেকেলে গিয়ে আবার লাহোর, এশিয়া কাপের ভ্রমণ ঝক্কি নিয়ে জানতে চাইলে তার উত্তর, ‘সত্যি বলতে, এটা সহজ নয়। তবে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের মানিয়ে নিতেই হবে। সূচি যা-ই হোক, আমাদের মেনে চলতে হবে। আমরা চেষ্টা করি যেন রিকভারিটা ভালো হয় আর নিজেদের খেয়াল নিজেদেরই রাখতে হয়। সূচি নিয়ে আমাদের কিছুই করার নেই।’

বাংলাদেশ দলে শান্ত না থাকায় পরিবর্তন আসছেই। লিটন দাস কি ইনিংসের গোড়াপত্তনে নিজের চেনা জায়গায় ফিরবেন, নাকি শান্তর ছেড়ে যাওয়া তিন নম্বরে খেলবেন সেটাই প্রশ্ন। হুট করে ওপেনার বানিয়ে দেওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ বাজিমাত করে দিয়েছেন আফগানদের বিপক্ষে, শাহিন-নাসিম-রউফদের বিপক্ষে কি পারবেন? এই প্রশ্নও থাকছে।

এশিয়া কাপে দুই ম্যাচে এখন পর্যন্ত শাহিনের শিকার ৬ উইকেট, হারিসের ৫ আর নাসিমের ৪। বাংলাদেশের টপ-অর্ডার যদি এই তিনের ঝড় সামলাতেও পারে, এরপর তাদের চিরায়ত দুর্বলতা লেগস্পিন নিয়ে আছেন শাদাব খান। তারও শিকার এখন পর্যন্ত ৪ উইকেট। ব্যাটিংটাও তো কম ভয় ধরানো নয়। বিশ্বের ১ নম্বর ব্যাটসম্যান বাবর আজম তো আছেনই, মোহাম্মদ রিজওয়ান আর ইফতিখারকে নিয়েও ভয় কম নয়। এই দুজন বিপিএলের সবশেষ আসরে বাংলাদেশের বেশিরভাগ বোলারকেই খেলে বেধড়ক পিটিয়ে গেছেন।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা হাত-পা বেঁধে পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। তার ওপর জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘ। পাকিস্তানের ব্যাটিং-বোলিং দুইই ভয় ধরানো। তারা অনুশীলন করে তৈরি। অন্যদিকে বাংলাদেশ দলে সেরা খেলোয়াড়ই চোটের কারণে দেশে ফিরে গেছেন। প্রত্যাবর্তন করা লিটনের সাম্প্রতিক ফর্ম বেশ সুবিধার নয়। কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি আর এলপিএল মিলিয়ে ৯ ইনিংসে মোটে একখানা হাফ সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের বিপক্ষে তার পরিসংখ্যানও সুবিধের নয়, ২ ম্যাচে করেছেন মোটে ৩৮ রান। এক ম্যাচে ৩২, অন্য ম্যাচে ৬।

হারলেই দেশে ফিরতে হবে না, অন্তত এই নিশ্চয়তাটুকু আছে এই ম্যাচে। বাংলাদেশের ভরসা এতটুকুই। আগে-পরে মিলিয়ে স্কোয়াডে এখন চারজন ওপেনার। তবে পাকিস্তানের পেস আক্রমণ সামলানোর মতো নেই কেউই। তাই সাকিব আর মুশফিকের অভিজ্ঞতাতেই ভরসা। সেই সঙ্গে মিরাজের ভাগ্য।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শান্ত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন