শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিলো আফগানিস্তান

fec-image

এশিয়া কাপের সুপার ফোরে যেতে আফগানিস্তানের জন্য এটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। নাটকীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ২ রানে হারের তিক্ত স্বাদ পেয়ে বিদায় নিয়েছে রশিদ খানরা। তাতে বাংলাদেশের পর বি গ্রুপ থেকে গ্রুপ জয়ী হয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কান দল।

টান টান উত্তেজনার ম্যাচে ৩৭ ওভার শেষে আফগানদের স্কোর ছিল ৮ উইকেটে ২৮৯। জয়ের জন্য দরকার আর তিন রান। আর সুপার ফোরের দরজা পার করতে এক বলে তিন! কিন্তু ৩৭.১ ওভারে ধনাঞ্জয়ার বলে মুজিব আউট হতেই আত্মসর্পণ করে আফগানরা। তখন ম্যাচ জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকলেও পরের দুটি বলে ডট দিয়ে ফজল হক ফারুকিকে লেগ বিফোরে আউট করে শ্রীলঙ্কাকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছেন ধনাঞ্জয়া। অথচ ওই মুহূর্তে নতুন সমীকরণে ৩৭.৪ ওভারে স্কোর ২৯৫ রান করলেও সুপার ফোরে যেতে পারতো তারা। কিন্তু বিষয়টি হয়তো আফগান খেলোয়াড়দের কেউ জানতেন না! কারণ আউট হওয়ার আগে ফারুকি দুটি বল-ই খেলেছেন রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে। ওই মুহূর্তে ১৬ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকা রশিদকে স্ট্রাইকে দিলে ভিন্ন কিছু হতে পারতো! যে বলে ফারুকি আউট হয়েছেন, ওই ডেলিভারিতে ছক্কা মারলেই সফল হতো তারা।

ম্যাচটা এই পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য মূল অবদান মোহাম্মদ নবীর। শুরুতে লঙ্কানরা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ৩২ বলে বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে ম্যাচটা নিজেদের আয়ত্ত্বে এনেছেন তিনি-ই। তার ব্যাটে ভর করেই ২৬.২ ওভারে স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ২০১! দলের ওই স্কোরে নবী ৬৫ রানে আউট হলেও ম্যাচটা তাদের আয়ত্তের বাইরে ছিল না। নবীর ৩২ বলের ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ৫ ছক্কা।

নবীর পর করিম জানাত ও আগে থেকে প্রান্ত আগলে থাকা অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদী ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু ২৩৪ রানে করিম জানাত ও ২৩৭ রানে শহীদী ফিরলে চাপে পড়ে যায় আফগান দল। তবে সাত উইকেট পড়ার পরও নাজিবউল্লাহ জাদরান যেভাবে খেলছিলেন, তাতে নির্ধারিত ওভারে জয় অসম্ভব ছিল না। কিন্তু জাদরান (২৩) দ্রুত গতির ইনিংস খেলে ২৭৬ রানে আউট হলে পরে চাপের কাছেই নতি স্বীকার করেছেন আফগানরা। ৩৭.৪ ওভারে আফগানিস্তান সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮৯ রানে থেমেছে।

৭৯ রানে ৪টি উইকেট নেন কাসুন রাজিথা। শেষ দিকে ১২ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা দুই উইকেট নিয়েই ম্যাচ জয়ে অবদান রেখেছেন। তাছাড়া ৩৬ রানে দুটি উইকেট নেন দুনিথ ভেল্লালাগে। একটি করে নিয়েছেন মাহিশ থিকশানা ও পাথিরানা।

শুরুতে লাহোরে টস জিতে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৯১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় শ্রীলঙ্কান দল। দারুণ শুরুতে আফগানদের ওপর চেপেও বসে তারা। বিনা উইকেটে তুলে ফেলে ৬৩! দিমুথ করুনারত্নে ব্যক্তিগত ৩২ রানে ফিরলে বদলে যায় ইনিংসের চিত্র। ৮৬ রানে পড়ে যায় তৃতীয় উইকেট। তার পর দলকে উদ্ধার করে মেন্ডিস-আসালাঙ্কার ১০২ রানের জুটি। আসালাঙ্কা (৩৬) দলের ১৮৮ রানে ফিরলে ভাঙে দারুণ এই জুটি।

২২১ রানে ধনাঞ্জয়া (২১) আউট হলে শ্রীলঙ্কা ধাক্কা খায় আবারও। দলকে টেনে তুলতে থাকা কুশল মেন্ডিস (৯২) রানআউট হন দলের ২২৬ রানে। মেন্ডিসের ৮৪ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। ২২৭ রানে পতন হয় সপ্তম উইকেটেরও। তখনও বাকি আরও দশ ওভার। তার পর দলকে তিনশোর কাছাকাছি নিয়ে যেতে অবদান রাখে দুনিথ ভেল্লালাগে ও মাহিশ থিকশানার ৬৪ রানের জুটি। ভেল্লালাগে ৩৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষটা সমৃদ্ধ করতে গিয়ে ইনিংসের শেষ বলে আউট হয়েছেন থিকশানা (২৮)।

৬০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন গুলবাদিন নাইব। ৬৩ রানে দুটি নেন রশিদ খানও। একটি নিয়েছেন মুজিব উর রহমান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান, এশিয়া কাপ, শ্রীলঙ্কা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন