শামীম’র ঝড়ে মান বাঁচল সাকিবের রংপুরের

fec-image

দলীয় রান ৫০ পেরোনোর আগেই নেই ৫ উইকেট। ৮০ ছুঁতে ছুঁতে নেই ৭ উইকেট। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে রংপুর ভালো কিছু করবে এমন বাজি ধরার লোক খুব কমই ছিলেন। কিন্তু ধ্বংসস্তুপের মাঝে যেন নতুন করে জেগে উঠলেন শামীম পাটোয়ারী। করলেন এবারের বিপিএলের দ্রুততম ফিফটি। ১৯তম ওভারে ওবেদ ম্যাককয়ের ওপর দিয়ে টর্নেডো ছোটালেন। তিন ছক্কা ও দুই চারের মারে নিলেন ২৬ রান। রংপুরের স্কোর ঘুরল তাতেই।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুর ১০০ পার করবে কি না তা নিয়েই ছিল শঙ্কা। তবে শামীম খেললেন নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংসটাই। আগেরদিন গোল্ডেন ডাক মেরে ফিরে যাওয়া এই খেলোয়াড় বুধবার ছিলেন ক্ষুরধার। তার বিধ্বংসী ইনিংসে রংপুর পেল মোটামুটি চ্যালেঞ্জিং স্কোর। ফাইনালে যেতে এখন তামিমের ফরচুন বরিশালের সামনে লক্ষ্য ১৫০ রান।

মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে দর্শকরা নড়েচড়ে বসার আগেই শুরু হলো বরিশালের বোলারদের তাণ্ডব। বাতাসে ব্যাপক সুইং। আর তাতে দিশেহারা রংপুর রাইডার্স। সাকিব আল হাসানের ব্যাটে রান আসেনি আজও। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার শেষে রংপুরের স্কোর ২৬ রানে তিন উইকেট। ১৪৯ রানের এই স্কোর নিশ্চিতভাবেই তৃপ্ত করবে রংপুর ভক্তদের।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই কাইল মায়ার্স বুঝিয়েছিলেন মিরপুরে আজ সুইংয়ের বাড়তি ঝলক দেখা যাবে। প্রথম ওভারে সাবধানী শুরু করেছিলেন শেখ মেহেদি এবং রনি তালুকদার। এদিনও অবশ্য রংপুরের ওপেনিং নিয়ে বাজি কাজে আসেনি। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরেছেন মেহেদি। সাইফুদ্দিনের আউটসুইং বল তার ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় মুশফিকের গ্লাভসে।

একই ওভারে ফিরেছেন সাকিবও। বাড়তি বাউন্সের বলটা ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় মুশফিকের হাতে। ঠিক দুই ওভার পরেই উইকেট নিয়েছেন মায়ার্স। রনি তালুকদার বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন জেমস ফুলারের কাছে। এরপরেই অবশ্য হাল ধরেছেন নিশাম। টানা তিন চারে মোমেন্টাম ঘোরানোর প্রচেষ্টায় ছিলেন এই কিউই অলরাউন্ডার।

তবে নিশাম আজ আর জাদু দেখাতে পারেননি। দলীয় রান ৪৮ যখন, তখনই ফিরে যান নিশাম। করেছেন ২২ রান। তার আগে নিকোলাস পুরান ফিরেছেন ৮ বলে ৩ রানের হতাশাজনক ইনিংস খেলে। বড় কিছু করা হয়নি মোহাম্মদ নবী এবং নুরুল হাসান সোহানের। ইনিংস মেরামতের চেষ্টায় ব্যর্থ ছিলেন দুজনেই। নবীর রান ১২ আর সোহানের ১৪। ৭৭ রানে গেল ৭ উইকেট। সোহান ছাড়া বাকি সকলেই হয় বাজে শট খেলেছেন, নয়ত বাড়তি বাউন্সে হয়েছেন পরাস্ত।

শেষ পর্যন্ত ত্রাতা হয়েছেন শামীম। আবু হায়দার রনিকে নিয়ে ৩৩ বলে গড়লেন ৭২ রানের জুটি। হার্ডহিটার ব্যাটার হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন। প্রমাণের সুযোগ পেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। শামীমের প্রতি ফিনিশার হিসেবে প্রত্যাশা ছিল যত বেশি, তিনি ব্যাটিংয়ে ছিলেন ততটাই অধারাবাহিক। তবে বড় মঞ্চে আজ খেললেন দুর্দান্ত এক ইনিংস।

২০ বলে তার এই ফিফটি চলতি বিপিএলে যৌথভাবে দ্রুততম সেঞ্চুরি। আবু হায়দার রনিও খারাপ খেলেননি। প্রত্যাশামাফিক সঙ্গ দিয়েছেন শামীমকে। সিনিয়র আর পরীক্ষিত ক্রিকেটারদের ব্যর্থতার দিনে তার ৯ বলে ১২ রানই ছিল যথেষ্ট কার্যকরী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন