শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল মানিকছড়ি: সোমবার হরতাল

500

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধিঃ
সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে মানিকছড়িতে স্কুল শিক্ষক নিহতের প্রতিবাদে সোমবার সমগ্র উপজেলার দিনব্যাপী হরতাল আহ্বান করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা। এদিকে রবিবার সকাল থেকে সদরের সকল দোকান-পাঠ স্কুল-কলেজ অঘোষিত বন্ধ করে রাস্তায় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষ। ফলে চট্রগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। নিহত শিক্ষক চিংসামং চৌধুরীর(৪২) লাশের ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় পারিবারিক শ্মশানে দাহ করার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে আহত জেএসএস নেতা মংসাজাই মারমা ওরফে জাপান চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। থানায় এখনো মামলা হয়নি। এদিকে এ নির্মম হত্যার প্রতিবাদে নাগরিক কমিটির উদ্যোগে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত উপজেলায় হরতাল ঘোষনা করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৭.৪৫মিনিটে মানিকছড়ি বাজার সংলগ্ন রাজপাড়ায় জেএসএস উপজেলা সভাপতি মংসাজাই মারমা ওরফে জাপান বাবুর ভাড়া বাসায় অজ্ঞাত নামা শসস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মানিকছড়ি কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা চিংসামং চৌধুরী(৪২) ঘটনাস্থলে নিহত হন।

এ ঘটনায় জেএসএস সভাপতি গুলিবিদ্ধ হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মানিকছড়ি হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তিনি বর্তমানে ওখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশংকামুক্ত বলে জেএসএস সূত্র নিশ্চিত করেছেন। ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা জোরদার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে ৫ রাউন্ড চায়না রাইফেলের গুলির খোঁসা উদ্ধার করেছে। নিহত চিংসামং চৌধুরী উপজেলার ছদুরখীল গ্রামের হেডম্যান রিপ্রুচাই চৌধুরীর ছেলে।

এদিকে শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে রবিবার সকাল ৮ থেকে বিকাল পর্যন্ত অঘোষিতভাবে বাজার ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অংগসংগঠন সহ সাধারণ মানুষ চট্রগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল,পিকেটিংয়ের কারণে জেলার সাথে চট্রগ্রামের যোগাযোগ বন্ধ ছিল বিকাল পর্যন্ত। বিক্ষোভ মিছিল শেষে কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এক সমাবেশে নাগরিক কমিটির ব্যানারে সোমবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত উপজেলায় হরতাল ঘোষণা করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা।

এ সময় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন হরি কুমার মারমা, সজল বরণ সেন, এম,কে আজাদ, মো.মাঈন উদ্দিন, সফিকুর রহমান ফারুক, মো.আবুল কালাম, এম.এ.রাজ্জাক, এম.এ. জব্বার, মো. জয়নাল আবেদীনসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলেও প্রশাসন নীরব থাকায় এ হত্যাকান্ড ঘটেছে। দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। লক্ষীছড়ি জেএসএস নেতা জ্যোতিষ দেওয়ান এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফকে দায়ী করলেও ইউপিডিএফ তা অস্বীকার করেছে। ঘটনার পর থেকে রামগড় সার্কেল এ.এস.পি মো. শাহজাহান ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।

তিনি জানান, সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ও সেনাবাহিনী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। রবিবার দুপুর পর্যন্ত নিহতের কেউ মামলা দেয়নি। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন