শেষ টেস্ট জয়ে সিরিজ পাকিস্তানের
খেলা ডেস্ক:
বাংলাদেশ সফরে এসে সবশেষে একমাত্র জয় পেল পাকিস্তান। শনিবার ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনে ৩২৮ রানের বড় জয় পেয়েছে পুরো সফরে টাইগারদের কাছে নাকাল হওয়া পাকিস্তান দল।
এর ফলে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০তে জিতে নিল পাকিস্তান। এর আগে খুলনায় প্রথম টেস্টটি ড্র হয়।
শনিবার মিরপুরে পাকিস্তানের বেঁধে দেয়া ৫৫০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২২১ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ ইনিংস।
দিনের শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। একের পর এক আউট হন ওপেনার তামিম থেকে শুরু করে সবাই।
তৃতীয় দিনের সঙ্গে আজ সকালে মাত্র ২৩ রান যোগ করেই আউট হয়ে গেলেন তামিম ইকবাল। পাকিস্তানি পেসার ইমরান খানের বল খেলতে গিয়ে ঠিকভাবে ব্যাটেই লাগাতে পারেননি। কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে তুলে দিলেন সরফরাজ আহমেদের হাতে। ৬৭ বলে থেমে গেল তামিমের ৪২ রানের ইনিংস।
আশা ছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ওপর। বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফরম্যান্সের পর পাকিস্তান সিরিজে তার কাছ থেকে ভালো কিছুরই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু পুরো সিরিজেই যেভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন, তা রীতিমত অবিশ্বাস্য। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান সিরিজের শেষ ইনিংসেই কিছু করে দেখানোর সুযোগ ছিল তার সামনে।
কিন্তু ৮৬ রানে ২ উইকেট পড়ার পর রিয়াদ মাঠে নেমে কোন দায়িত্বশীলতাই দেখালেন না। টেস্ট ম্যাচ আর ওয়ানডি কিংবা টি২০’র কোন পার্থক্যই তার কাছে যেন নেই। প্রতিটি বলেই খেলতে হবে। এমন কি, ভালো বল, খারাপ বল যাছাই করারই যেন কোন মানসিকতা তার মধ্যে নেই। যে কারণে মাত্র ২ রান করেই ইমরান খানের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে ইউনিস খানের হাতে ক্যাচ দিলেন রিয়াদ।
মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি গড়তে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। প্রথম ইনিংসে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকার কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে দায়িত্বশীল ব্যাটিংই সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা তার কাছে।কিন্তু একি করলেন সাকিব! উইকেটে নেমেই যেন আউট হওয়ার জন্য ছটফট করা শুরু করেদিলেন। ফল যা হওয়ার তাই হলো। মাত্র ২০ বল খেলে ১৩ রান করেই আউট হয়ে গেলেন তিনি। মোহাম্মদ হাফিজের ঘূর্ণি বল ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন আকাশে। ওয়াহাব রিয়াজ তালুবন্দী করেন সেটা।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানের প্রশ্ন উঠলে সবাই একবাক্যে রায় দেবেন মুশফিকুর রহিমের কথা। কিন্তু ঢাকা টেস্টে তিনিও কেমন যেন ব্শে ছটফটে। উইকেটে টিকে থাকারই কোন চেষ্টা নেই যেন তার মধ্যে। যে কারণে বিশাল রানের নীচে চাপা পড়ার পরও অধিনায়কের তাড়াহুড়া এবং ৯ বল খেলে কোন রান না করেই আউট হয়ে গেলেন তিনি। ইয়াসির শাহের বল বুঝতেই পারেননি। বোল্ড হয়ে গেলেন।
৪০ ওভারে ১৩৪ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় মুমিনুল হক এবং সৌম্য সরকার। লাঞ্চ থেকে এসে প্রথম ওভারেই আউট হয়ে গেলেন সৌম্য সরকার। পরের ওভারেই আউট ইনফর্ম মুমিনুল হক। ১০২ বলে ৬৮ রান করা মুমিনুলের অবশ্য দুর্ভাগ্য। ইয়াসির শাহকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে যান মুমিনুল। কিন্তু শট কভারে নীচু হয়ে আসা ক্যাচটি ঝাঁপিয়ে পড়ে তালুবন্দী করে নেন আসাদ শফিক।
শুভাগত হোমের সাথে ৩৪ রানের ৩৪ রানের জুটি গড়ে ভালোই জবাব দিচ্ছিলেন তাইজুল ইসলাম। কিন্তু স্পিনার ইয়াসির শাহের ঘূর্ণি বলে অবশেষে ক্যাচ তুলে দিলেন সামি আসলামের হাতে। ২৮ বলে ১০ রান করে ফিরে গেলেন তিনি।
মোহাম্মদ শহিদকে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন শুভাগত হোম। কিন্তু ৩৯ রানে নিজেকে উইকেটে সেট করে ফেলার পরও জুনায়েদের ইয়র্কার বুঝতে না পেরে খেলতে যান। কিন্তু বল ফাঁকি দিয়ে তার স্ট্যাম্পে আঘাত হানে। সঙ্গে সঙ্গে শেষের পর্দাও টেনে দেয় ঢাকা টেস্ট।রে সফরকারীরা।