সন্দেহজনক ‘রোহিঙ্গা’ মানিক ও সহযোগিদের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে নির্বাচন অফিস
গত ৩১ মে কক্সবাজার নির্বাচন অফিসে ছবি তুলতে গিয়ে ‘রোহিঙ্গা’ সন্দেহে আবেদন ফরম জব্দ হওয়া আব্দুল মানিকের পিতা ও মাতার সঠিক পরিচয়সহ বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন জেলা নির্বাচন অফিসার এস.এম শাহাদাত হোসেন।
সেই সঙ্গে তাকে ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতাকারীদের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
ভোটার ফরমে দাখিলকৃত সকল কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাইপূর্বক আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ দেন জেলা নির্বাচন অফিসার এস.এম শাহাদাত হোসেন।
গত ১ জুন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ উপজেলা বিশেষ কমিটির সদস্য সচিব বরাবর এই নির্দেশনা জারি করেন জেলা নির্বাচন অফিসার। যার স্মারক নং-১৭.০৩.২২০০.০০০.৫৫.০০১.১৯-২১৭। চিঠির অনুলিপি নির্বাচন কমিশন সচিব, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহা-পরিচালক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসারের নিকট পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত আব্দুল মানিক কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ভিলেজার পাড়ার বাসিন্দা মরহুম শামসুল আলমের ছেলে।
এদিকে, ইসলামপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ভোটার তালিকার তথ্য চেয়ে আরেকটি পৃথক অফিস আদেশ জারি করেন জেলা নির্বাচন অফিসার এস.এম শাহাদাত হোসেন। যার স্মারক নং-১৭.০৩.২২০০.০০০.৫৫.০০১.১৯-২১৮।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ভিলেজার পাড়ার ইতোপূর্বে কতটা ভোটার আবেদন ফরম পূরণ করা হয়েছে, তিনি জানতে চান। কতজন ভোটারের নিবন্ধনের জন্য ছবি তোলা হয়েছে তার পুর্নাঙ্গ তালিকা তৈরী করে ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে দাখিলকৃত সকল কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাইপূর্বক সরেজমিনে তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদনসহ জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে দাখিল করার জন্য অনুরোধ করেন জেলা নির্বাচন অফিসার এস.এম শাহাদাত হোসেন।
এছাড়া ইতোপূর্বে ইসলামপুরের ৬ নং ওয়ার্ডের যতজন ভোটারের ছবি নিবন্ধন করা হয়েছে তাদের তথ্য সার্ভারে আপলোড না করতেও নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত আব্দুল মানিকের পিতা শামসুল আলম বন্যহাতির আক্রমণে প্রায় ১০ বছর আগে মারা যান। পেশায় সে সিএনজি চালক। পরিবারের পাঁচ ভাই ১ বোনের সবাই রোহিঙ্গা। নিজের পরিচয় গোপন করে ছোট ভাই নুর হোসেনের নামে সে ভোটার আবেদন ফরম পূরণ করে। যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তার ফাইল পৌঁছে যায় নির্বাচন অফিসের সার্ভার পর্যন্ত। সুনির্দিষ্ট তথ্য, অভিযোগের ভিত্তিতে ছবি তোলার আগে আটকে যায় মানিকের ভোটার প্রক্রিয়া। এ জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
তবে, একজন প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিক যেখানে ভোটার হওয়ার জন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হিমশিম খায়; মাসের পর মাস ভোগান্তিতে পড়তে হয়, সেখানে রোহিঙ্গারা কীভাবে এতগুলো কাগজপত্র জোগাড় করে, তা নিয়ে বিস্ময় রয়েছে সবার। ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।