সশস্ত্র বাহিনী করপোরেট বডি হয়ে যাচ্ছে: মিজানুর

মিজানুর
নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী করপোরেট বডি হয়ে যাচ্ছে। আর এই করপোরেট বডির স্বার্থ রক্ষার্থে কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না, তা-ও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবে না।’

‌আদিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক গণশুনানিতে আজ বুধবার মিজানুর রহমান এসব কথা বলেন। রাজধানীর সিবিসিবি সেন্টারে ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এ গণশুনানির আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে আমরা গর্ব করি। তারা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত। তাই সরকার যখন তাদের জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধবিমান কেনে, আমাদের সমুদ্রসীমা সুরক্ষিত রাখতে তাদের জন্য যখন সাবমেরিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়, আমরা সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু যখন দেখি, আমাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্বে থাকা সশস্ত্র বাহিনী ব্যাংক গড়ছে, গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঠিকাদারি কাজে লিপ্ত হচ্ছে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য ব্যস্ত, তখন মনে ভয় জাগে, অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বেসরকারি সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যার যেখানে বিচরণ, তাকে তাঁর বিচরণক্ষেত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা যৌক্তিক বলে আমাদের মনে হয়।’

ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র আর জনগণের নেই। রাষ্ট্র চলে গেছে ব্যাংক ডাকাত, ভূমিদস্যু, আমলাদের হাতে। মানুষের অধিকার রক্ষায় মানবাধিকার কমিশনের অসহায়ত্ব পরিষ্কার। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই একমাত্র পথ। গণপ্রতিরোধ, গণ-আন্দোলন ও গণসংঘাতের মধ্য দিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে।’

দেশের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের চিত্র গণশুনানিতে তুলে ধরেন সাতজন পাহাড়ী। তাঁরা নিজেরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং এখনো অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি তাঁদের। রাখাইন চো থান সে এবং তেন নান্টু জানান, ১৯৭১ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার রাখাইন ছিল, কিন্তু এখন তাদের সংখ্যা মাত্র ১২০০।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু এই সংগঠনের নেতা হওয়ার জন্য আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করিনি। ১৯৪৭ সালে যেখানে দেশের ৩১ শতাংশ ছিলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ, এখন আছেন মাত্র ৯ শতাংশ।’

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক নোমান আহমদ খান সভাপতিত্ব করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন