সাঈদীর জানাজায় অস্ত্র হাতে কে এই হেলমেটধারী?

fec-image

মঙ্গলবার ( ১৫ আগস্ট) কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জামায়াত- শিবির সমর্থকদের। এ সময় ফোরকান আহমেদ নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন।

প্রথমদিকে পুলিশের গুলিতেই এই মৃত্যুর ঘটনা বলা হলেও পরে জানা যায়, জানাজাবিরোধী মিছিল থেকে মুখোশধারীরা জানাজায় আসা লোকদের ওপর হামলা করে।

ফুটেজে দেখা যায়, হেলমেট পরা এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে অস্ত্র তাক করে মিছিলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই হেলমেট পরিহিত ব্যক্তির নাম বেলাল উদ্দিন। তিনি চকরিয়া পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের শামসুল আলমের পুত্র এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। বেলাল উদ্দিন ছাড়াও অস্ত্রধারী আরও দু’জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- চকরিয়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের মৃত বাদশাহ মিয়ার পুত্র মিজানুর রহমান ও আকবরিয়া পাড়ার মৃত ইসহাকের পুত্র ফরিদুল আলম।

জানা যায়, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর মঙ্গলবার বিকালে চকরিয়া বাসস্টেশনে গায়েবানা জানাজার আহ্বান জানায় জামায়াত। তবে প্রশাসন তাদেরকে অনুমতি দেয়নি। পরে তারা বিনা অনুমতিতে লামা চিরিঙা জামে মসজিদের মাঠে জানাজা আদায় করে।

জানাজা শেষ হতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে একটি সশস্ত্র মিছিল আসে। সেই মিছিল থেকে মুসল্লি ও জামায়াত কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় মিছিল থেকে করা গুলিতে ফোরকান আহমেদ নিহত হন।

তিনি চকরিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের আবুল ফজলের পুত্র। বাড়ির পাশে ছোট একটি চায়ের দোকান করে সংসার চালাতেন তিনি। তিন কন্যা ও এক পুত্রের জনক। দুই বছর আগে মারা যায় তার ছেলে।

স্থানীয় জামায়াত নেতা আহসানুল হক মানবজমিনকে বলেন, আমরা চকরিয়া বাসস্ট্যান্ডে জানাজা পড়ার জন্য প্রশাসন থেকে অনুমতি চেয়েছিলাম। তারা প্রথমে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা করার অনুমতি দেয়। এর কিছুক্ষণ পর আবার লামা চিরিঙা পুরাতন জামে মসজিদ মাঠে করতে বলা হয়। সেটাতেও আমরা রাজি হয়েছিলাম। তবে পরে প্রশাসন থেকে সেই অনুমতি বাতিল করে দেয়া হয়। বলা হয় কোনো জানাজা পড়া যাবে না।

একপর্যায়ে সংগঠনের সিদ্ধান্তে জামায়াত গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে। সেই সিদ্ধান্ত আমরা নেতাকর্মীদের জানিয়েও দিয়েছিলাম। তবে এই সিদ্ধান্তের পরও অনেক মুসল্লি সেখানে চলে আসেন। তিনি বলেন, আমরা ঠিক ৪টায় জানাজা শুরু করেছিলাম। এরপর যে যার মতো করে চলে যাচ্ছিল। এরইমধ্যে পুলিশ আসলে মুসল্লিরা সটকে পড়েন।

এরমধ্যে একটি সশস্ত্র মিছিল এসে বিনা উস্কানিতে গুলি চালায়। স্থানীয় এমপি’র সমর্থকরা এ মিছিলে সশস্ত্রভাবে ছিলেন।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, আমি ঠিক এই বিষয়ে বলতে পারবো না। আর এরকম কোনো ফুটেজও পাইনি। তবে আপনি জানিয়েছেন ভালো হয়েছে। আমি খোঁজ নিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, অনুমতি না নিয়েই জামায়াতের লোকজন এখানে জানাজা করেছে। আমরা বাধা দেয়ায় বিশৃঙ্খলা করেছিল। আমাদেরকে অবরোধও করে রেখেছিল তারা। এই ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে।

সূত্র: মানবজমিন

নিউজটি ভিডিওতে দেখুন:

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অস্ত্র, জানাজা, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন