সাজেকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত বিজিবি সদস্যকে সদর দফতরে আটক: কোর্ট অভ ইনকোয়্যারি গঠিত

HWF Pic2

পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট:

সাজেকের শিয়ালদহে ধর্ষণ চেষ্টা অভিযোগে অভিযুক্ত বিজিবি সদস্যদের ক্যাম্প থেকে ক্লোজ করে ব্যাটালিয়ান সদর দফতরে আটক রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তে কোর্ট অভ ইনকোয়্যারি গঠন করা হয়েছে। বিজিবি অভিযোগটি গুরুত্বের সাথে নিয়েছে এবং এ তদন্তে নূন্যতম শৈথিল্য দেখাবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। ২/১ জন সদস্যের অপকর্মের দায় পুরো বিজিবি বহন করবে না বলে পার্বত্যনিউজের সাথে আলাপকালে কথাগুলো জোর দিয়ে বললেন নবসৃষ্ট ৫৪ বিজিবি’র জোন কমাণ্ডার লে. কর্ণেল মাহমুদুন্নবী।

পাহাড়ীদের অভিযোগ, ‘গত ৩ নভেম্বর সাজেকের শিয়ালদহ এলাকার ভূষণ কার্বারী পাড়ার তিন পাহাড়ি  নারী পাড়ার পাশ্ববর্তী ছড়াতে গোসল ও পানি আনতে যায়। এ সময় অত্র এলাকায় দুই মাস আগে স্থাপিত নতুন বিজিবি ক্যাম্পের ৫ সদস্যও সেখানে গোসল করতে যায়। পরে গোসল ছেড়ে ৩ বিজিবি সদস্য ক্যাম্পে চলে গেলেও ২জন সেখানে থেকে যায়। এরপর তিন পাহাড়ি নারীর মধ্যে ভিকটিম ওই নারী পানি নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে ছড়া থেকে কিছুদূরে গেলে বিজিবি’র ওই সদস্য তাঁর পিছু পিছু গিয়ে হঠাৎ পিছন দিক থেকে তাকে জাপটে ধরে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ সময় বিজিবি সদস্যের সাথে ধস্তাধস্তিকালে ওই নারীর চিৎকার শুনে পানি আনতে যাওয়া অপর দুই নারী জয়ন্তী ত্রিপুরা ও চরেন বালা ত্রিপুরা এগিয়ে আসলে বিজিবি’র ওই সদস্য পালিয়ে যায়। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গ্রামবাসীরা ১৫-১৬ জন মিলে ক্যাম্পে দায়িত্বরত কমান্ডারের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ করেন এবং ওই বিজিবি সদস্যের শাস্তির দাবি জানালে দায়িত্বরত ক্যাম্প কমান্ডার তাদেরকে দোষী বিজিবি সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন’।

এদিকে উল্লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল থেকেই বিভিন্ন পাহাড়ী সংগঠনগুলো বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে পাহাড়ী নারী ধর্ষণের অভিযোগ এনে আন্দোলন শুরু করেছে। এরই প্রেক্ষিতে পার্বত্যনিউজের পক্ষ থেকে নবসৃষ্ট ৫৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন। লে. ক. মাহমুদুন্নবী আরো জানান, মারিশ্যাস্থ ৩৯ বিজিবি’র ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডার লে. ক. রবিউল ইসলামকে প্রধান করে একটি কোর্ট অভ ইনক্যোয়ারি গঠন করা হয়েছে।

কোর্ট অভ ইনকোয়্যারির তদন্ত কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে এর প্রধান লে. ক. রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি পার্বত্যনিউজকে জানান, আজ তাদের তদন্ত টিম অভিযোগকারী ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন। বিচারে কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলেও তিনি জানান। তবে  অভিযুক্ত বিজিবি’র সদস্যরা ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে দুই ব্যাটালিয়ন কমান্ডারই পার্বত্যনিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তবে স্থানীয় একটি সূত্র পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছে, ধর্ষণ নয়,  সেখানে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা বা জাপটে ধরার মতো ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগটি তারা শুনেছেন বলে দুই ব্যাটালিয়ন কমান্ডারই পার্বত্যনিউজকে নিশ্চিত করেছেন। তবে তদন্ত ছাড়া তারা কোনো ঘটনাকেই নিশ্চিত বলে ধরে নিচ্ছে না বলে আরো জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন