সিনহা হত্যা মামলার রায় পড়া শুরু

fec-image

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় রায় পড়া শুরু হয়েছে।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ২টার দিকে এজলাসে ওঠেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল। এরপর ৩০০ পৃষ্ঠার রায়ের ধারাবাহিক কার্যক্রম আরম্ভ করেন।

তার আগে বেলা ২টার দিকে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ আসামিকে কারাভ্যানে করে আদালতে হাজির করা হয়।

এদিকে, প্রদীপসহ সব আসামির ফাঁসি চেয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে ভুক্তভোগিরা। তারা প্রদীপের ফাঁসি দাবি করেছে।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- নির্যাতিত পরিবারের সদস্য টেকনাফ সদরের হামজালাল, মুরাদ হাসান, হালিমা বেগম ও হোয়াইক্ষ্যংয়ের হাফেজ আহমদ। তারা প্রদীপের ফাঁসির দাবি জানান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন। মানববন্ধন চলাকালীন ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, প্রদীপের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দেন তারা।

বিশেষ করে প্রদীপের নির্মম নির্যাতনের শিকার সংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার প্রতিবাদি শ্লোগানে মুখরিত হয় আদালতপাড়া। তার সঙ্গে কণ্ঠ মেলায় ক্ষুব্ধ জনতা।

সবার দাবি একটাই, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তাঁর সহযোগীদের ফাঁসি দিতে হবে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া লোকজনের মধ্যে কেউ জানান, তাঁরা ওসি প্রদীপের হাতে নিহতদের পরিবার; কেউ কেউ দাবি করেন, তাঁরা ক্রসফায়ার থেকে ফিরে আসা লোক কিংবা নির্যাতিত ব্যক্তি। তাঁরা সবাই ওসি প্রদীপের ফাঁসির সাজা চান।

এদিকে, রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল ৭টা থেকে আদালত প্রাঙ্গণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।

৪ মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০২১ সালের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। এ মামলায় মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন