প্রধানমন্ত্রী সাথে সন্তু লারমার বৈঠকের অভাবে চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে শূন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে: চাকমা রাজা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমার মধ্যে সরাসরি দ্বি-পাক্ষিক আলোচনা এবং দেখা সাক্ষাতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশিষ রায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সন্তু লারমার অনেক দিন সরাসরি দেখা সাক্ষাৎ কিংবা বৈঠক হচ্ছে না। এর ফলে এখানে একটি শূন্যতা এর সৃষ্টি হচ্ছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বর্তমান চিত্র এবং সামনে অগ্রসর’ শীর্ষক জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশিষ রায় এ কথা বলেন। বুধবার রাঙামাটির হোটেল সাবেরাংয়ে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অধ্যাপিকা বাঞ্ছিতা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গুনেন্দু বিকাশ চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, জেলা পরিষদের সদস্য মনোয়ারা জসিম, রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন ছিদ্দিকীসহ রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠাানের কর্মকর্তা, আইনজীবী, হেডম্যান, নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রকৃত পক্ষে চুক্তির কতভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রচার দরকার উল্লেখ করে দেবাশিষ রায় বলেন, মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বোঝা যাবে আমরা কতটা খারাপ অবস্থায় আছি। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার এবং জনসংহতি সমিতির বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত নিয়ে কথা বলেন।

সেনাবাহিনীর মর্যাদাহানি হয় এমন কোনও কাজে সেনা সদস্যদের সম্পৃক্ত না করার আহ্বান জানিয়ে চাকমা রাজা বলেন, এখানে চুক্তি অনুযায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হলেও ৬টি সেনানিবাস থাকবে, যেটা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি আর জনগণের সম্মতির প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত করা যায় তবে তা সককিছুতে নয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিসহ উপজাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরোধিতার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যদি আলোচনার মাধ্যমে এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নিতো তাহলে এই বিরোধিতা আসতো না। আমরা এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে শর্তযুক্ত হ্যাঁ বলতে রাজি ছিলাম, কিন্তু সকলকে পাশ কাটিয়ে এই উদ্যোগ মোটেও কাঙ্খিত ছিল না।

তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো সরকার মনোনিত দলীয় লোকজনদের দ্বারা পরিচালিত অভিযোগ করে দেবাশিষ রায় বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শরণার্থী এবং আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স এ পর্যন্ত একজন আভ্যন্তরীণ উদ্বাাস্তুকেও কোন সহায়তা করেনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যানের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে কিন্তু কমিটির কাজের কোন অগ্রগতি নেই। সব জায়গায় শুধু হতাশা।

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২০ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে আগামী ২ ডিসেম্বর। বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে এটিই শেষ বর্ষপূর্তি পালন। আগামী বছরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সে হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুর একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয়ে উভয় পক্ষ আন্তরিক বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “প্রধানমন্ত্রী সাথে সন্তু লারমার বৈঠকের অভাবে চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে শূন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে: চাকমা রাজা”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন