ঈদগাঁও ইউএনও বিমল চাকমাকে স্ট্যান্ড রিলিজের দাবিতে স্মারকলিপি পেশ

fec-image

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা ইউএনও বিমল চাকমাকে স্ট্যান্ড রিলিজ ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি পেশ ও অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এতে অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আলোচিত গরুকান্ডকে কেন্দ্র করে অবৈধ লেনদেনসহ নানা অনিয়ম উল্লেখ করা হয়েছে। পৃথক সময়ে এ অভিযোগ ও স্মারকলিপি দায়ের করা হয়।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত ৬ মে ঈদগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি(অতিরিক্ত দায়িত্ব) শারমিন সুলতানা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ উপায়ে আনার অভিযোগ ১৫৫টি গরু-মহিষকে সন্দেহ ভাজন হিসেবে জব্দ করেন।

পরে নানা দেনদরবারের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা উক্ত জব্দকৃতের মধ্যে ১৪১টি পশুর বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও বিশেষ চক্রের মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে চার দিন পর কাগজপত্রহীন ১৪টিসহ ১৫৫টি গরু-মহিষ ছেড়ে দেন।

এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে তোলপাড় শুরু হয়। এর পর থেকে ঘটনাটি ধামাচাপায় ইউএনও কার্যালয়, ইউএনও’র বাসা ও বাইরে গোপন স্থানে দফায় দফায় বৈঠক ও দৌড়ঝাঁপ চলতে থাকে।

এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা যোগদানের পর থেকে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, সিন্ডিকেট বাণিজ্য, অবৈধ আর্থিক লেনদেন, মাসোহারা গ্রহণ, অবৈধ অর্থের বিনিময়ে টপসয়েল লুটে সহায়তাকরণ,

ইজারার পরিবর্তে দফায় দফায় রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালি মহালের অবৈধ মেয়াদ বৃদ্ধি , অবৈধ করাত কল সচলে সহযোগিতা করণ, ঘুষের বিনিময়ে ইট ভাটা চালু , কৌশলে রাজস্ব ফাঁকিসহ তার আরো বিভিন্ন অপকর্ম স্মারক লিপিতে উল্লেখ করেন।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ইউএনও বিমল চাকমা অফিস সময়ের পরে নিয়মিত বহিরাগত গোপন স্থানে বৈঠক করে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের চাহিদামত প্রশাসনিক কার্যাক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করেন।

এছাড়াও উপজেলার জনগণের মাঝে জনশ্রুতি আছে ইউএনও বিমল চাকমা দিন দিন উৎকোচ গ্রহণ ও দুর্নীতিতে এক মহাকাব্য হয়ে উঠছেন । যাহা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ইতিমধ্যে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। যার কারণে উপজেলা প্রশাসনের উপর সাধারণ জনগণের চরম আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার সর্বসাধারণের দাবি অনিয়ম ও দুর্নীতির বর পুত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা’কে দিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি ঈদগাঁও, ঈদগাঁও মানবিক ফাউন্ডেশন,

জাতীয় নাগরিক পার্টি সংগঠক ও ছাত্র প্রতিনিধি ঈদগাঁও নেতৃবৃন্দ উপজেলা বাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন ।

অভিযোগকারীদের মধ্যে ঈদগাঁও উপজেলা নাগরিক পার্টির সদস্য এডভোকেট শেখ আহমদ ফারুকী বলেন , নবগঠিত এ উপজেলাকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

ঈদগাঁও মানবিক ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্টা এডভোকেট মোবারক সাইদ বলেন, অত্র উপজেলাটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পেছনে জনগণের অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে। শুরুতেই যদি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাগাম টেনে ধরা না হয় উপজেলার সুফল ভোগ সুদূরপরাহত হবে।

ছাত্র প্রতিনিধি ফারুক মোহাম্মদ নওশাদ বলেন, অত্র উপজেলার সরকারি যাবতীয় বরাদ্দ সুষম বন্টন হচ্ছে না বলে চারদিকে অভিযোগ প্রচার আছে। সম্প্রতি গরুকান্ড অর্ধ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন সংক্রান্ত সংবাদ

গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হলে অত্র উপজেলার প্রধান কর্মকর্তা ইউএনও সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই তারা অবিলম্বে উপজেলাকে দুর্নীতি মুক্ত দেখতে চান।

অভিযোগ ও স্মারকলিপির বিষয়ে জানতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ সালাহউদ্দিনের মোবাইল নাম্বারে কল দিয়েও রিসিভ না করাতে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন