মহেশখালীর ৪৫ জেলের কোন হদিস নেই
মহেশখালী প্রতিনিধি:
২৯ মে প্রাকৃতিক দূর্যোগ ‘মোরা’র কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে মহেশখালীর পুটিবিলা এলাকার ৪টি ট্রলার ডুবির ঘটনায় এখনো ৪৫জন জেলের কোন হদিস নেই। নিখোঁজের সংখ্যায় পুটিবিলা এলাকার ৪৫জন জেলে এখনো মৃত বা জীবিত উদ্ধার হয়নি। পুটিবিলা এলাকা যেন বিধবা পল্লীতে পরিনত হয়েছে।
একই পরিবারে পিতার সাথে পুত্র, নানার সাথে নাতি, মামার সাথে ভাগিনা, ভাইয়ের সাথে ভাই, শশুরের সাথে জামাই সহ একই পরিবারে ৩/৪ জন করে জেলে নিখোঁজ রয়েছে। ২৪/২৫ মে এর দিকে পুটিবিলা এলাকার মরহুম মোহাম্মদ আলী পুত্র স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আব্দু শুক্কুর এর মালিকানাধীন এফবি সায়েদ ,এফবি ওয়ালিদ-১, এফবি ওয়ালিদ-২, ও একই এলাকার হাজ্বী মোশারফ আলী পাড়া গ্রামের নুরুল আলম প্রকাশ বাঁশি মাঝির মালিকানাধীন এফবি গাউছিয়া
নামক ৪টি ফিশিং ট্রলার প্রায় ৮২জন মাঝি মাল্লা নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়।
২৯ মে প্রাকৃতিক ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’র সিগন্যালের পর অসতর্কতার কারণে ৩০ মে ভোর রাতে ‘মোরা’র কবলে পড়ে ৪টি ফিশিং ট্রলার সাগরে ডুবে যায়।
এ সময় ৪টি ফিশিং ট্রলারে থাকা ৮২জর মাঝিমাল্লা সাগরে ভাসমান অবস্থা থেকে ১জুন ভারত থেকে বাংলাদেশে ত্রাণবাহী নৌ-জাহাজ সুমিত্রা ৩৩জন জেলেকে সাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে।
পরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে। উদ্ধার করা ৩৩জনের মধ্যে আবু ছিদ্দিক নামে ১ জেলে মৃত্যু বরণ করে।
অপরদিকে টেকনাফের অদুরে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর সদস্যরা হাবিব উল্লাহ, নিয়ামত উল্লাহ, আবু বক্কর ও আব্দু ছালাম নামের ৪ জেলেকে ২ জুন উদ্ধার করলেও এখনো ৪৫জন জেলে সাগরে নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের বিষয়ে মহেশখালী থানায় ১২১০নং/১৭ইং ও ৬২/১৭ নং মূলে পৃথক ২টি নিখোঁজ ডায়রি দায়ের করেছে ট্রলার মালিক।
অনেক নিখোঁজ মাঝি মাল্লার বাড়িঘর বাতাসে ভেঙ্গে গেলেও এখনো প্রশাসন বা স্থানীয় পৌর পরিষদ থেকে কোন ত্রাণ সামগ্রী পায়নি বলে নিখোঁজ জেলে পরিবারের অভিযোগ রয়েছে।
১টি গ্রামে ৪৫জন নিখোঁজ হওয়ায় এলাকায় কান্নার রোল পড়ে। থামানো যাচ্ছে না বিধবা ও ছেলে হারা মায়ের আর্তনাদ। নিখোঁজ জেলেরা হলেন পুটিবিলা এলাকার আমানুল করিম, ইয়াছিন, নুরুল হোসেন, খলিল আহাম্মদ, কবির,আহাম্মদ শাহাব মিয়া, গোলাম হোছন, শহিদুল্লাহ, মোক্তার, আরফাত, মো. জহির, মামুন, মমতাজ বাবুর্চি, শুক্কুর, আমান উল্লাহ, ফরিদুলআলম, মিজান, নজরুল ইসলাম, আমান উল্লাহ, এহেচান, মীর কাশেম প্র. মেইট্যা, সার্জান, সোহেল, এমরাম, জাবের, আনছার ড্রইবার,বেলাল সাবাহ উদ্দিন, নুরুল আহমদ, খুশিল্যা, মলই, নুরুল হোছন
, রফিক, কালুয়া মাঝি, আজাদ, শামশুল, এয়াদেত উল্লাহ ,ছৈয়দ উল্লাহ, জাবেদ উল্লাহ, ফজল করিম, শহিদুল্লাহ ,ইছাহাক, জনি, আলতাজ, মোতালেব, আবু হামিদ, খাইরুল আমিন।
এ ব্যাপারে মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম জনান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্ট গার্ড উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেয়র তালিকা প্রদান করলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর দিকে ৪দিন সাগরে ভাসামান অবস্থায় থেকে উদ্ধার হয়ে আসা জেলেদের অভিযোগ ট্রলার মালিক অতিরিক্ত সময়ে সাগরে মাছ আহরণ করার কারণে দূঘর্টনার শিকার হন তারা। গত ৩মাস পূর্বে মাছ আহরণ করার সময় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মহেশখালীর জেলেদের কোন ধরনের হিসাব না করে ট্রলার মালিকরা এক প্রকার জোর করে সাগরে পাঠায় জেলেদেরকে।