পেকুয়ায় স্কুলের জায়গা জবর দখল করে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ
পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিমদাদ মিয়াঘাটস্থ উজানটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা জবর দখল করে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে অভিভাবকমহল ও দখলকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয় সচেতনমহল।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এলাকায় শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য উজানটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় বিগত ৩০/৩৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রী ও রয়েছে অনেক। ইতিমধ্যে ওই স্কুলের জায়গা জবর দখল শুরু করেছে স্থানীয় মাঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হানিফ চৌধুরী। মাঈনুল ইসলাম চৌধুরী ওই স্কুলের সভাপতিও।
২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ওই জায়গায়তে দোকানঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে। স্থানীয় অভিভাবক ও বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করলে তারা অগ্রাহ্য করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেছেন।
তারা আরো জানিয়েছেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু স্কুলের জমি জবর দখল না করতে বারণ করেন। তারপরও মাঈনুল ইসলাম চৌধুরী স্কুলের সভাপতি হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যানের কথা পর্যন্ত অমান্য করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্কুলের ক্লাসরুম সংলগ্ন জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মোখিন হবে। লেখাপড়ার ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। স্কুলের পরিবেশ রক্ষায় নিমার্ণকাজ বন্ধের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান তারা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হানিফ চৌধুরী জানান, উজানটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি তাদের জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এছাড়াও যেখানে দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে সে জমি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লিজ নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ওই জমি লিজ নিয়ে আমরা ভোগদখল করছি। স্থানীয় কিছু কুচক্রি মহল আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
অভিযুক্ত মাঈনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এটি আমাদের লিজভুক্ত জায়গা। কোন স্কুলের জায়গা নই। শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে স্থানীয় আ’লীগ নেতা ও শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বল্লা জানান, স্কুলের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা মানে স্কুলের পরিবেশ এবং জাতিকে ধ্বংস করা দুইটি সমান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ছিদ্দিক আহমদ জানান, কচিকাচা মেয়েরা স্কুলে আসবে স্কুলের শ্রেণিকক্ষের পাশে একটি দোকান করা খুবই দুঃখজনক। এটি শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন করবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান স্কুলের পরিবেশ রক্ষায় আমরা স্বোচ্ছার, এটির কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে যাচাইবাচাইপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেলিম উল্লাহ চৌধুরী জানান জায়গা কার জানি না তবে দোকানঘর নির্মাণ করলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবউল করিম জানান বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু জানান স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টির সত্যতা জানান এবং স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করার জন্য নিষেধ দেন এবং হানিফ চৌধুরীকে কাগজ পত্র আমার দপ্তরে নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান।