সেনা ক্যাম্প স্থাপনের দাবিতে স্মারকলিপি

লামা প্রতিনিধি:

বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার গয়ালমারায় সেনা ক্যাম্প স্থাপন ও পাহাড়ী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কর্তৃক হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, নির্যাতন বন্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কয়েক শতাধিক নির্যাতিত স্থানীয় জনসাধারণ লামা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

প্রেরিত স্মারকলিপিতে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের অব্যাহত চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, অপহরণ ও সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে স্থানীয় জনসাধারণের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ প্রতিনিয়ত ফাঁসিয়াখালী ও বাইশারি এলাকার জনসাধারণের বাড়িতে হানা দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। কিছুদিন পূর্বে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা গয়ালমারা এলাকার এক বাঙ্গালী তরুণীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। চাঁদার দাবিতে রাবার মালিক ও শ্রমিকদের অপহরণ করে নির্যাতন করছে। পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের কারণে কয়েক শতাধিক রাবার শ্রমিক বাগানের কাজ ফেলে চলে এসেছে। অনেক বাগান মালিক বাগানে যেতে পারে না। বাগান মালিকদের কাছে পত্র দিয়ে ও মোবাইল ফোনে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা দিতে অক্ষম রাবার মালিকদের বাগানের কাজ করতে দিচ্ছে না। পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের অত্যাচারের কারণে কয়েক হাজার রাবার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের বর্বর অত্যাচারের ভয়ে এলাকার লোকজন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

স্মারকলিপি দিতে আসা সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের উপর একাধিক বার নির্যাতন করেছে। চাঁদার টাকা দিতে না পারায় সন্ত্রাসীরা তার পালিত ছাগল নিয়ে গেছে। ঈদগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুরুল হুদা জানিয়েছেন, পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের চাঁদার কারণে তারা ব্যবসা করতে পারছে না।

গয়ালমারার স্থানীয় কৃষিজীবি আকবর হোসেন, নুরুল আজিম, রুবেল ইসলাম, আব্দুর রহিম, নুরুল ইসলাম, মানিক মিয়া ও গৃহিনী মমতাজ বেগম, ছেনুওয়ারা বেগম জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা তাদের বাড়ি ঘরের হাঁস-মুরগি, চাল-ডাল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। চাহিদা মোতাবেক হাঁস-মুরগি, চাল ও নগদ টাকা দিতে না পারলে ধরে নিয়ে হাত পা বেঁধে বর্বর নির্যাতন করে। পুলিশকে জানালে নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। স্থানীয় উপজাতিয় পাড়ার লোকজন পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের সহায়তা করে।

আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর লোকজনের গমনাগমন বিষয়ে পাহাড়ী সন্ত্রাসীদেরকে তারা জানিয়ে দেয়।

স্থানীয় অধিবাসীদের পক্ষে সৈয়দ হোসেন তুষার, আকবর হোসেন, কামাল উদ্দিন, আবুল কালাম, রবিউল করিম সহ কয়েক শতাধিক অধিবাসী স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন