টেকনাফে ভাইস চেয়ারম্যানকে শপথ পাঠ করানোর দায়ে চার জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
আদালতের আদেশ অমান্য করে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফেরদৌস আহমদ জমিরীকে শপথ বাক্য পাঠ করানোর দ্বায়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ৪ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত এ নোটিশ দেন।
আগামী ৬ মে তাদেরকে আদালতে হাজির হয়ে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চারজন হলেন- জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভাইস নির্বাচিত ফেরদৌস আহমদ জমিরীর বিজয়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে পুন:ভোট গণনার দাবি করে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মৌলভী রফিক উদ্দিন বাদী হয়ে গত ২৩ এপ্রিল কক্সবাজার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল-১ ও যুগ্ম-জেলা ও দায়রা জজ-১ এর আদালতে ০১/২০১৯ নম্বর মামলা দায়ের করেন। মামলার শুনানী শেষে বিচারক সৈয়দ মুহাম্মদ ফখরুল আবেদীন মাওলানা ফেরদৌস আহমদ জমিরীর শপথ গ্রহণের উপর আগামী ৬ মে পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন। একই সাথে পূণ:ভোট গণনার জন্য ব্যালট পেপারসহ ঘানিব্যাগ ও আনুসাঙ্গিক সকল কাগজপত্র নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে তলব করা হয়।
মাওলানা রফিক উদ্দীনের রফিক উদ্দীনের অভিযোগ, নিয়ম মতে যুগ্ম-জেলা ও দায়রা জজ-১ এর আদালতের জারিকারক ছাদেক মিয়া গত ২৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফেরদৌস আহমদ জমিরীর শপথ গ্রহণের উপর দেয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের আদেশনামা জমা দিতে যান। কিন্তু ওই অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা তা গ্রহণ করেননি। একই দিন সকাল থেকে ওই আদেশনামা জমা দিতে চেষ্টা করেন বাদি মাওলানা রফিক উদ্দীনও। তবে সারাদিন গড়িমসি করে অফিস সময়ে তা গ্রহণ করেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা। শেষ পর্যন্ত নানাভাবে তদবির করলে অফিস সময়ের প্রায় দু’ঘন্টা পর ওই দিন (২৪ এপ্রিল) বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে আদেশনামা গ্রহণ করেন মাসুদুর রহমান মোল্লা।
অন্যদিকে ওই দিন গ্রহণ না করায় জারিকারক ছাদেক মিয়া বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায়ও দ্বিতীয়বার আদেশনামা জমা দিতে যান। কিন্তু তখনও নানা অজুহাত দেখিয়ে জারিকারকের দেয়া আদেশনামা গ্রহণ করেনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। তা গ্রহণ না করার বিষয়টি জারিকারক লিখিতভাবে অবহিত করেছেন।
মাওলানা রফিক উদ্দীনের রফিক উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, আদালতের ইস্যু করা জারিকারক কর্তৃক জমা দেয়া স্থগিতাদেশের আদেশনামা গ্রহণই করেনি রিটার্নিং কর্মকর্তা। আমার কাছ থেকে গ্রহণ করা আদেশনামাটিও গোপণ করে রাখে। অথচ তা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের প্রেরণের যথেষ্ঠ সময় ছিলো।
তিনি অভিযোগ করেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা মাওলানা ফেরদৌস আহমদ জমিরীর সাথে অনৈতিক যোগসাজস করে আদালতের আদেশনামা গ্রহণে গড়িমসি করেন এবং গ্রহণ করলেও তা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে না পাঠিয়ে অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে গোপণ রেখে দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই অভিযোগে রবিবার (২৮ এপ্রিল) আবার আদালতের শরণাপন্ন হন মাওলানা রফিক উদ্দীন। একই সাথে দায়ের করা মামলায় নতুন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করার আবেদন। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে তাদেরও বিবাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ৬ মে কারণ দর্শানোর জবাব পাওয়ার মামলার শুনানির দিন ধার্য্য করবেন আদালত।