নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে দেড়লাখ টাকা মুক্তিপণে এক শিক্ষার্থীর মুক্তি


মিয়ানমার সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ির সোনাইছড়ি সড়ক এখন চোরাচালান ও মানবপাচারের জোনে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা, স্বর্ণ, গরু-মহিষ সুপারিসহ মিয়ানমারের নানা পণ্য। পাশাপাশি মানবপাচারও বেড়েছে এ সড়কে।
আর এ সড়কে মানবপাচারের সর্বশেষ শিকারে পড়ে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্র মোহাম্মদ তারেক। যাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় এ সড়ক দিয়ে। আর ফেরতও দেয়া হয় একই সড়ক ব্যবহার করে।
তারেকের পিতা আবু তাহের পার্বত্যনিউজকে বলেন, তার ছেলেকে দেড়লাখ টাকা মুক্তিপণে মুক্ত করা হয়।
আবু তাহের আরো বলেন, তার বাড়ি রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ফাক্রিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। তার ছেলে স্থানীয় গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে।
ঘটনার দিন গত শনিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার ছেলেকে ১ দল অপহরণকারী সিএনজিতে তুলে নিয়ে যায় টেকনাফ রাহারছড়া পাহাড়ে । অপহরণকালে তার ছেলের মুখে টিস্যু চেপে বেহুশ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। সোমরার ( ২৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টায় তাকে নাইক্ষ্যংছড়ি ডাকঘরের পাশে সিএনজি স্টেশনে ছেড়ে দিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে অপহরণকারীরা।
রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বাবুল বলেন, বর্তমানে মানবপাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তার ইউনিয়ন থেকে অন্তত ২ শতাধিক যুবক মানবপাচারের স্বীকার। যাদের একটি অংশ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বা মাধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমিয়েছে। কিছু মিয়ানমারে জেলে। বাকি সবাই বাংলাদেশের টেকনাফ পাহাড়ে বা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
বিশ্বস্থ একাধিক সূত্র জানায়, রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি, বাইশারী, কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়া, সোনাইছড়ি, ঈদগড় ও নাইক্ষ্যংছড়ি সদর থেকে অভাবী, বিদেশ যেতে আগ্রহী যুবক/কিশোরদের ফুসলিয়ে সাগরপথে টেকনাফ হয়ে অবৈধভাবে বিদেশ পাচারের নিরাপদ রোড নাইক্ষ্যংছড়ি-সোনাইছড়ি সড়ক। যেটির শাখা রয়েছে ৫টি।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, এ সড়কটি কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। সুতরাং এ সড়কের সোনাইছড়ি চৌরাস্তার মোড় তথা ঘূণগাছ তলা এলাকা বা সড়কের সুবিধাজনক স্থানে ১টি বিজিবির চেকপোষ্ট বসালে অর্ধেক চোরাচারান কমে যাবে। এখন এটি এখন গণমানুষের দাবি।