পাহাড়ে লিচুর ফলন বিপর্যয়ে হতাশ প্রান্তিক কৃষক
জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাগড়াছড়িতে লিচুর ভয়াবহ ফলন বিপর্যয় হয়েছে। ক্ষোভ ও হতাশায় অনেক বাগান মালিকরা লিচু গাছ কেটে ফেলার চিন্তা করছেন। বিশেষত চায়না টু ও থ্রি জাতের লিচুর বাগান মালিকরা। গাছে লিচুর ফলন আসেনি বললেই চলে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেক কৃষক।
বছরের এই সময়ে লিচু গাছের থোকায় থোকায় লিচু থাকার কথা। অথচ এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে গাছে লিচুর ফলনই আসেনি। সারা বছর বাগান পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের পরও ফলন না আসায় হতাশায় চাষিরা।
বিপুল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেও লোকসানে বাগান মালিকরা। গত ২/৩ বছর ধরে গাছে ফলন না আসায় অনেক কৃষক ক্ষোভ ও হতাশায় লিচু গাছ কেটে অন্যান্য বাগান করার পরিকল্পনা করছে ।
মানিকছড়ির উদীয়মান কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম ৬/৭বছর আগে থেকে ৫ একর জায়গায় শখের বসে লিচু বাগান সৃজন করে এখন পযন্ত কোন আউটপুট পাইনি! গত দুই বছরে মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছে! তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি অনেক পরিশ্রম এবং খুব শখের বসে লিচু বাগান করেছিলাম। গাছে ফলন নেই, তাই গাছ কেটে অন্যান্য বাগান করার চিন্তা করছি।
উপজেলার আরেক সফল কৃষক, মো. এয়াকুব আলী বলেন, আমার ৫ একর বাগানে বিগত সময়ে প্রচুর লেচুর বাম্পার ফলন হলেও এবছর হঠাৎ গাছে লিচুর ধস পড়েছে। প্রতি বছর ৫/৭ লক্ষ টাকার লিচু বিক্রি করতাম, আর এবার এক টাকার লিচুও বিক্রি করতে পারিনি। যদিও এ বছর ফুল- ফলের সময় এলাকায় বৃষ্টিপাত ছিল না।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মর্তুজ আলী বলেন, খাগড়াছড়ি জেলায় এবছর ২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। উপাদান লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭শ ৮৭ মে. টন। কিন্তু খরা আর প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে লিচুর ফলন এবছর অর্জিত হবে না। তবে আগামীতে যেন লিচুর ফলন ভালো হয়, সে বিষয়ে কৃষকদেরকে নানা পরামর্শ দিয়েছি আমরা।