বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ফের বিতর্কিত অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম, উত্তেজনা ছড়াল ক্যাম্পাসে
সরকার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা রামু সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের পুনঃযোগদান নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে একদল বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষের কক্ষে যান মুজিবুল আলম। তার আগমনের খবরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল ও রামু থানার ওসি এমন কান্তি চৌধুরী ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন।
জানা গেছে, গত বুধবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুপ্রতীম বড়ুয়ার কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়ে মুজিবুল আলম পুনরায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সহকারি কমিশনার (ভূমি), ওসি ও শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেন। বিকালে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করার পর অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। সেখানে শিক্ষকদের সাথে আলাপ করে নিজের কক্ষে যান এবং কিছু ছবি তুলে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। যাওয়ার আগে তিনি জানান, আগামী রবিবার থেকে তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বহিরাগতদের সহায়তায় কলেজে আতঙ্ক সৃষ্টি করে মুজিবুল আলমকে পুনর্বহালের চেষ্টা চলছে। তাঁরা আরও জানান, তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপর নিপীড়ন, মামলা ও হয়রানি, ফান্ডের অর্থ আত্মসাৎসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ছাত্রলীগ ও পুলিশকে ব্যবহার করে তাদের আন্দোলন দমন করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।
গত ১৯ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের চাপে মুজিবুল আলম পদত্যাগ করেন। শিক্ষার্থীরা সেদিন তাঁর কক্সবাজারের বাসায় গিয়ে স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করে। এর পরদিন কলেজে তালা ঝুলিয়ে ও সড়ক অবরোধ করে দাবি আদায় করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, তাঁর অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর বহু গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তিনি প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত ধামাচাপা দেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুপ্রতীম বড়ুয়া জানান, মুজিবুল আলমের পদত্যাগপত্র অফিসিয়াল নিয়ম মেনে দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। তবে গত বুধবার তিনি আবার যোগদান করেন।
কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরাও লিখিতভাবে মুজিবুল আলমের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।
এই বিষয়ে মুজিবুল আলমের প্রতিক্রিয়া জানতে শুক্রবার রাতে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।