ঈদ বকশিসের নামে বাড়তি ভাড়ার হয়রানি

বাড়তি ভাড়া

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় ঈদ বকশিসের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। দাবিকৃত বাড়তি ভাড়া না দিলে রীতিমত নাজেহালের শিকার হচ্ছে যাত্রীরা।

ঈদ বকশিস নাকে এই বাড়তি ভাগা অনেকটা জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের উপর। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ লোকজন। এছাড়া এ বিষয়কে কেন্দ্র করে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত ঝগড়া।

খবর নিয়ে জানা যায়, শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় ঈদের বকশিসের নামে যা ইচ্চা তাই বাড়তি ভাগা আদায় করা হচ্ছে। তারা স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল সবার কাছ ঢালাওভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। যা কোথাও কোথাও নির্ধারিত মূলের দ্বিগুন।

এদিকে ঈদ উপলক্ষে যাত্রীর বাড়তি চাপ থাকায় গাড়ির চালকেরাও পেয়ে বসেছে। তাদের দাবীকৃত ভাড়া না দিলে গাড়িতে উঠাচ্ছেনা। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়েই গাড়িতে উঠছে। এতে ক্ষুব্ধ ও হাতাশা ভোক্তভূগী যাত্রীরা।

এমনই সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়েছে পেকুয়া থেকে কক্সবাজার আসা সাইফুল ইসলাম নামে এক যাত্রীর, তিনি বলেন, ঘর থেকে পেকুয়া বাজার আসতে রিক্সা চালকে দিতে হয়েছে ৩০ টাকা। যা সাভাবিক সময়ে ১০ টাকা। সিএনজি (অটোরিক্সা) করে পেকুয়া থেকে গরুবাজার রাস্তার মাথা আসতে দিতে হয়েছে ৬০ টাকা। যা অন্যান্য সময় ৩০ অথবা ৪০ টাকা। আর ওখান থেকে যাত্রীবাহি বাসে কক্সবাজার আসতে দিতে হয়েছে ১০০ টাকা যা অন্যান্য সময় ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ছাত্র হয়ে এই বাড়তি টাকা দিতে তার খুব গায়ে লেগেছে।

এই যাত্রায় সিএনজি চালক ও বাসের হেলপারের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয় ভাড়া নিয়ে। সিএনজি চালক তাকে বলেন, ছাত্র বলে ছাড় নেই। ঈদে বাড়তি টাকা দিতেই হয়। নয়ত অন্য গাড়ি করে যাওয়ার পরার্মশ দেয়। একইভাবে বাসের হেলপারও বলেন যাত্রীর অভাব নেই ১০০ টাকা দিলে যাওয়া যাবে নয়ত না।

শুধু সাইফুল ইসলামের নয় এই ভোগান্তি থেকে বাদ পড়ছে না ঈদে পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাওয়া লোকজন, ওসব চালক ও হেলপাররা জন প্রতি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। যা বকশিস নামে আদায় করছে। যেখানে বাচ্চা যাত্রীরাও বাদ পড়ছেনা।

এ ব্যাপারে সিএনজি চালক মোহাম্মদ হারুন জানান, বছরে ২ টা ঈদে। আর এই ঈদে যদি একটু বকশিস না পায় তাহলে কিভাবে চলে। তাই বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে তাই বলে জোর পূর্বক অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া উচিত না। যা অনেকে করছে।

বাড়তি ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে মোবারক আলী নামে এক কলেজ শিক্ষক জানান, ঈদে অনেকে বকশিস প্রত্যাশা করে। কিন্তু এই বিষয়টি এখন ভোগান্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যায়, অতিরিক্ত ভাড়া না দিলে যাত্রীদের গাড়িতে নিচ্ছেনা। এমনকি ঝগড়া-বিবাদ করছে। যা কোনভাবে উচিত নয়। এছাড়া দেখা যায়, ঈদের ৪-৫ দিন পরেও এই প্রতা রেখে দেয় অনেক চালক ও হেলপার।

এ ব্যাপারে পেকুয়া জিপ চালক সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত মোহাম্মদ বেলাল জানান, ঈদ বকশিসের নামে যাত্রী হয়রানির বিষয়টি তারা শুনতে পেয়েছে। এই কাজটি সব চালক করেনা। কয়েকজনের কারনে সবারই বদনাম হচ্ছে। তবে তাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বকশিসের নামে যাত্রী হয়রানি বন্ধে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন