উখিয়ায় দুর্গন্ধের উৎস থেকে নিজের গোডাউনে মিলল ব্যবসায়ী জসিমের লাশ

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়ায় নিখোঁজের ৫ দিন পর ব্যবসায়ী জসিমের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। ১৫ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মরিচ্যা বাজারের তার নিজস্ব গোডাউন থেকে জসিম উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে সে মরিচ্যা বাজার এলাকা থেকে সে নিখোঁজ হয়। পরিবার থেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না মেলায় নিখোঁজের ব্যাপারে উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ঘটনার ৫ দিন পর তার গোডাউন থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন (৩৫) হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মরিচ্যা এলাকার বাসিন্দা ছলিম উল্লাহর ছেলে। ব্যবসায়ী জসিমের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ, হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।

পাশাপাশি পুলিশের ক্রাইম সিন ম্যানেজম্যান্টের বিশেষজ্ঞ ও পিআইবি ফরেনসিক টিম যৌথভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হত্যার ক্লু বের করার চেষ্টা তদন্ত কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মরিচ্যা বাজার এলাকায় লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে খুঁজতে গন্ধটা জসিমের গোডাউন থেকে বের হচ্ছে তা নিশ্চিত হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উখিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে শার্ট-প্যান্ট পরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার লাশের পাশ থেকে একটি বড় হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে নিখোঁজ জসিম উদ্দিনের স্ত্রী জোসনা আকতার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামীর সাথে কারো বিরোধ ছিলো না। ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে স্বামীর সাথে ফোনে কথা হলে কিছু বাজার নিয়ে আসার জন্য বলি। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকেও বাড়ী না ফেরায় পুনরায় মোবাইলে চেস্টা করলে তার ব্যবহৃত ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। সারারাত না ফেরায় ভোর পৌনে ৫টার দিকে পরিবারের লোকজনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখি অফিস কক্ষে একটি তালা লাগানো ছিল। পাশে গোডাউনের শার্টারটি খোলা ছিল। পরে অনেক খোজাঁখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। কেউ তাকে হত্যা করেছে। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের আমি কঠিন শাস্তি চাই।

হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, নিখোঁজের ৫ দিন পর ব্যবসায়ী জসিমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে কেউ হত্যা করেছে। তবে মৃত্যুর কারণ ও ধরন সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য লাশের ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, জসিম সওদাগর ছিলেন মরিচ্যার সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের প্রিয়মুখ। তিনি একজন শান্তস্বভাবের হালাল ব্যবসায়ী ছিলেন। কঠোর পরিশ্রমী এ যুবক ৫ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর আজ তার নিথর দেহ মিললো তারই ব্যবসায়িক গোডাউনে। তার মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যাবৃত। ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মাঝে বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন