ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে: তারানকো
ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধান করে ‘ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে’ বলে তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ওসকার ফার্নান্দেজ তারানকো। সমঝোতার মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে তারানকো এ আশা প্রকাশ করেন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সন্ধ্যা ছ’টা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বৈঠকের করে তারানকো চলে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, তারানকো আশা করছেন যে, সমঝোতার মাধ্যমে আগামী নির্বাচন হবে। আর সে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। সবাই মিলে সুষ্ঠু সমাধান খুঁজতে হবে।
তারানকোর বক্তব্যে খালেদা জিয়া একমত পোষণ করেন বলে জানান শমসের মোবিন।
তারানকো ‘ঐক্যমত্যের নির্বাচন হতে হবে’ বলে তাগিদ দিয়েছেন উল্লেখ করে শমসের মোবিন বলেন, এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন দু’ই নেত্রীকে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছেন জানিয়ে শনিবার তারানকো আরো একটি চিঠি দিয়েছেন খালেদা জিয়াকে। সঙ্কট সমাধানের মাধ্যমে আগামীতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পথ খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব।
এদিকে, শনিবার সকালে আবারও সংলাপের জন্য শেখ হাসিনার আহ্বানের পর দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা সংলাপের বিপক্ষে নই, সংলাপের পক্ষে। এ জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে ।
‘দলের নেতারা সব কারাগারে। সভা-সমাবেশের কোনো অধিকার নেই। কথা বলার অধিকার নেই। এরকম অবস্থায় সংলাপ হবে কীভাবে ?’ সরকারকে প্রশ্ন করেন বিএনপি এই নেতা।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, পরিবেশ ঠিক করে আপনি সংলাপের কথা বলুন। আমাদের আপত্তি থাকবে না। কীসের জন্য সংলাপ যাবো, তা স্পষ্ট করে বলুন।
শামসুজ্জামান বলেন, সরকার নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আমরা শুনতে পেরেছি, তাদেরকে (খোকা, এম কে আনোয়ার) ৫ মে’র ঘটনায় সঙ্গে জড়িত করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে ১৫, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আজিজুল বারী হেলালের বিরুদ্ধে ১২টি, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর বিরুদ্ধে ১৫টি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর বিরুদ্ধে ১২টি, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরবের বিরুদ্ধে ১২টি, ছাত্রদল সভাপতি আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের বিরুদ্ধে ১৫টি, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিবের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা করেছে পুলিশ।
তাণ্ডবের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপি নেতাদের দায়ী করে পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে শামসুজ্জামান বলেন, মন্ত্রীরা এসব মিথ্যাচার করে দেশকে সংঘাতের দিকে উস্কে দিচ্ছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন।
সোমবার নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে কোনো ধরনের বাধা না দিতে সরকারকে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
‘হস্তক্ষেপ করলে এর পরিণতি শুভ হবে না।’ এমনটাই জানান বিএনপির এই নেতা।