দীঘিনালায় সোনামিয়া টিলা ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতির বাড়িতে ব্রাশ ফায়ার, স্ত্রী নিহত ও সন্তান আহত
দীঘিনালায় সোনামিয়া টিলা ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আবদুল মালেকের বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা করেছে দূর্বৃত্ত্বরা। হামলায় আবদুল মালেকের স্ত্রী মোরশেদা বেগম(৪৫) এবং ছেলে আবদুল আহাদ (১১) গুলিবিদ্ধ হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে, বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামে গত শুক্রবার(১৪ আগস্ট) রাত দেড়টার সময়। পরে উদ্ধার করে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মোরশেদা বেগমের মৃত্যু হয়। এঘটনায় মালেকের ছেলে আবদুল আহাদ চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার রাত দেড়টার সময় উপজেলার বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামে আবদুল মালেকের বাড়ীতে হামলা করে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ১৭/১৮ জনের একটি দল। সন্ত্রাসীরা আবদুল মালেকের ঘর লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ব্রাশ ফায়ার করে।
৮/২০ মিনিটের ব্রাশ ফায়ারে গুলিবিদ্ধ হয় আবদুল মালেকের স্ত্রী মোরশেদা বেগমে(৪৫)। এসময় পাশে থাকা ছেলে আবদুল আহাদ (১১) গুলিবিদ্ধ হয়।
এদিকে সন্ত্রাসীরা ফিরে যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী রাজু আহমদ (২৫), আবুল হোসেন লিডার (৫৫) শাহিন স্বপন (৩৫) এবং খালেদা বেগম ৩২) বাড়ি লক্ষ্য করে ব্রাশ ফায়ার করে| তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে মোরশেদা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে হাসপাতাল নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
অন্যদিকে আবদুল আহাদের বাম কানের উপরে গুলি লাগে। আহাদ দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার পর পার্বত্য নাগরিক পরিষদ দীঘিনালা শাখা নেতাকর্মীরা ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে।
পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেমের মধ্যস্থতায় ঘণ্টাখানেক পর অবরোধ তুলে নিয়ে পুনঃরায় যান চলাচল শুরু হয়|
দীঘিনালা থানা পুলিশ মোরশেদা বেগমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে|
এব্যাপারে সোনামিয়া টিলা ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আবদুল মালেক জানান, আমি আমার স্ত্রী সন্তানসহ এক খাটেই ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ গুলির শব্দে আমি খাট থেকে মাটিতে শুয়ে পড়ি। পরে মোরশেদা‘কে পায়ে ধরে খাট থেকে নামানোর চেষ্টা করি।
৮/১০ মিনিটের মধ্যে শতাধিক রাউন্ড গুলি করে। আমার স্ত্রীর শরীরে বেশ কয়েকটি গুলি লাগে। তাকে কোলে নিয়ে অনেককেই ডাকাডাকি করি। প্রতিবেশীরা আসতে অনেক দেরি করে ফেলে, ফলে হাসপাতাল নেয়ার পথে সে মৃত্যুবরণ করে।
এঘটনায় আবদুল মালেক ইউপিডিএফ (প্রসীত) পক্ষকে দায়ী করেন।
এদিকে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের দীঘিনালা উপজেলার নেতা আল আমিন এবং মনছুর আলম হীরা প্রেস বিজ্ঞপ্তি মারফতে হামলার ঘটনায় ইউপিডিএফ প্রসীত পক্ষকে দায়ী করেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী জানান।
ইউপিডিএফ (প্রসীত ) পক্ষের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ষড়যন্ত্রমূলক এ ঘটনা ইউপিডিএফ (প্রসীত ) পক্ষের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত মোরশেদা বেগমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া আহত আহাদ চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।