খাগড়াছড়িতে দুইদিন ব্যাপী পিসিপি’র ২১তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্পন্ন

PCP new committee

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর দুইদিন ব্যাপী (১৫-১৬ জুলাই ২০১৪) ২১তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল গতকাল ১৬ জুলাই বুধবার খাগড়াছড়িতে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
কাউন্সিলে উপস্থিত প্রতিনিধিদের সর্বসম্মতিক্রমে থুইক্যচিং মারমা সভাপতি পুনঃনির্বাচিত হন। এছাড়া রিটন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও জুপিটার চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।

“বাঙালি জাতীয়তা আরোপ, বংশ পরম্পরার বাস্তুভিটা বেদখল, মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি বরদাস্ত করব না; আসুন, ’৮৯ এর গণজাগরণের চেতনায় পুনরুজ্জীবিত হই”, “ছাত্র সমাজকে বিভক্ত করে দমন-পীড়ন জারি রাখার সরকারি নীল নক্সা ভেস্তে দিই; পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াইয়ে বিজয় সুনিশ্চিত করতে প্রত্যেকে হই যোগ্য সৈনিক”- এই আহ্বানে খাগড়াছড়ি সদরের নারানহিয়াস্থ সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমার সভাপতিত্বে গত ১৫ জুলাই মঙ্গলবার দু’দিন ব্যাপী এ কাউন্সিল শুরু হয়।

কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে পিসিপি’র গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের প্রতি বিশেষ সম্মান শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ তাদের পরিবারবর্গের নিকট শহীদের বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান এবং কারামুক্তদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

কাউন্সিলের প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট পেশ করেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিলাস চাকমা ও আর্থিক রিপোর্ট পেশ করেন বাবলু চাকমা। এসব রিপোর্টের উপর বিশদ আলোচনা-পর্যালোচনা ও সংযোজন-বিয়োজনের পর হাউজে উপস্থিত সকলের সম্মতিতে রিপোর্ট পাশ করা হয়।

কাউন্সিলের দ্বিতীয় দিন (১৬ জুলাই বুধবার) শাখা কমিটির প্রতিনিধিবৃন্দ এলাকার পরিস্থিতি ও বিভিন্ন সমস্যাবলী তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং এর উপর বিশ্লেষণমূলক বক্তব্য তুলে ধরেন।

কাউন্সিলের শেষ অধিবেশনে সাবজেক্ট কমিটি কর্তৃক গঠিত একটি কমিটি হাউজে উপস্থাপন করা হয়। এরপর সংযোজন বিয়োজনের পর হাউজে উপস্থিত সকলে তুমুল করতালি ও শ্লোগানের মধ্য দিয়ে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটিকে অনুমোদন করেন।

নতুন কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় নেতা সচিব চাকমা। এর আগে সচিব চাকমা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে সন্তু লারমা আজ চীনের চিয়াং কাইশেকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।শাসক শ্রেণী তাকে গুটি হিসেবে ব্যবহার করে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে বিভক্তির মাধ্যমে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। তাই পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নতুন নেতৃত্বকে পুর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। তিনি ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করার মাধ্যমে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য পিসিপি’র নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

শপথ গ্রহণ শেষে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে বিদায়ী সহ-সভাপতি চন্দ্রদেব চাকমা, সাধারণ সম্পাদক বিলাস চাকমা, সহ-সাধারণ সম্পাদক রূপন মারমা ও সদস্য তাপু মনি চাকমাকে ফুল দিয়ে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানানো হয়। কাউন্সিলে তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি-বান্দরবান এবং ঢাকা-চট্টগ্রামের বিভিন্ন শাখা কমিটি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দুই শতাধিক প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ’র খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা, গনতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাদ্রী চাকমা প্রমুখ।- প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন