খাগড়াছড়িতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভুলে ২২পরীক্ষার্থী বিপাকে

নিজস্ব প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২২ এসএসসি পরীক্ষার্থী বিষয় বিড়ম্বনায় পড়েছে। ওই শিক্ষার্থীদের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে নবম-দশম শ্রেণীতে চারু ও কারুকলা বিষয়টি পড়ানো হলেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় থাকছেনা বিষয়টি। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে চারু ও কারুকলা বিষয়টি পড়ানোর অনুমতি না থাকলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার ২২ শিক্ষার্থীকে দু’বছর ধরে এ বিষয়ে পড়িয়ে আসছিল।

এমনকি বিদ্যালয়ের মূল্যয়ন পরীক্ষায়ও শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশের পর জানা গেল বিষয়টি নেই এসএসসি পরীক্ষার পাঠ্যক্রমে আর শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত হলো প্রবেশ পত্র হাতে পেয়ে। পরীক্ষার আগ মুহূর্তে এসে চারু ও কারুকলা বিষয়ের পরিবর্তে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে করে কপাল পুড়তে বসেছে ওই ২২ পরীক্ষার্থীর। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন কা-জ্ঞানহীন সিদ্ধান্তে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

মাধ্রমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কতৃক প্রকাশিত পরীক্ষার রুটিনে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ৬ই মার্চ শারীরিক শিক্ষা এবং ৮ই মার্চ অনুষ্ঠিত হবে কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ের পরীক্ষা। নবম দশম শ্রেণিতে চারু কারুকলা বিষয়ে পড়াশোনা করা সত্বেও কোনো ক্লাস ছাড়া একদিনের বিরতির পর এ ২২ জন পরীক্ষার্থীকে কৃষি শিক্ষা বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে হবে। করতে হবে ব্যবহারিক কাজও। এতে করে ওইসব পরীক্ষার্থীদের ভাল ফলাফল নিয়ে সন্দিহান অভিভাবকরা।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ভুলটা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হলেও পরীক্ষার আগ মুর্হুতে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ পত্রে কৃষি শিক্ষা থাকাতে বাধ্য হয়ে কোন প্রকার প্রস্তুতি ছাড়া এই বিষয়ে বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আর এর দায় নিতেও নারাজ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান সাংবাদিকদের বলেন, চারু ও কারুকলা বিষয়টির ব্যাপারে বোর্ডের অনুমোদন নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নিজ উদ্যোগে এ বিষয়টি শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছে। এটা স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুল। ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোর্ডের অনুমতি না নিয়ে অনুমোদনহীন বিষয় পড়ালো, এখন শিক্ষার্থীরা বিপদে পড়েছেন বলেও জানান তিনি।

শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও চারু ও কারুকলা বিষয়টি পড়ানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীলা তালুকদার বলেন, ‘ভুলের কারণে বিষয়টি হয়েছে। আমি অভিভাবকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করেছি। চারু ও কারুকলার পরিবর্তে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকদের পক্ষে কোনো অভিযোগ নেই। আশা করছি তেমন কোনো সমস্যা হবে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে এটি বড়ই দু:খজনক। দুই বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাবোর্ড কেউই এই ধরনের ভুল ধরতে না পারাতে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন