খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষের ঘটনায় পাহাড়ি ও বাঙালি ছাত্র পরিষদের পাল্টা-পাল্টি বিবৃতি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও বাঙালি ছাত্র পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করে বিবৃতি দিয়েছে দুই সংগঠন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাঙালি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. ওমর ফারুক ও ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক সমর চাকমা প্রেরিত পৃথক বার্তায় এ পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
বাঙালি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. ওমর ফারুক প্রেরিত বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা সফরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলে সেখানে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ছেলেরা বাধা দেয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মাঝখানে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিরসনের জন্য পৌরসভার কাউন্সিলর এসএম মাসুম রানাকে ছাত্র-ছাত্রীরা অুনরোধ জানান। এসএম মাসুম রানা বিষয়টি মীমাংসার জন্য মঙ্গলবার বিকালে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা মাঠে উপস্থিত হয়ে সমাধান করতে চাইলে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কর্মীরা তার অতর্কিত ভাবে ইট পাটকেল ছুড়ে মাসুম রানাকে আহত করে।
এক পর্যায়ে মাসুম রানা ও সোহেলকে ঘেরাও করে খবংপড়িয়ার দিকে নিয়ে যেতে চাইলে প্রশাসন খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার উদ্যোগে উপজেলা সড়ক থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা সদরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্ত্বরে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তরা বলেন, অবিলম্বে এসএম মাসুম রানার উপর পরিকল্পিতভাবে হামলাকারী ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কর্মী রাজু চাকমা (১৯), সজিব চাকমা (১৯), রনেল চাকমা (১৭), তপন চাকমা (১৮), সুনয়ন চাকমাসহ (২২) দোষিদের গ্রেফতার পূর্বক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এ বিষয়ে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার খাগড়াছড়ির জেলার সকল উপজেলায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল-সমাবেশের কর্মসূচী ঘোষনা করে এবং আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও ক্ষতিপূরণ না দিলে বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ পালনের হুমকি দেন।
এদিকে খাগড়াছড়িতে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সাধারণ পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলার অভিযোগ এনে কাউন্সিলর মাসুমরানা ও মাঈনুদ্দীনকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি সোনায়ন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক প্রতিবাদ বিবৃতিতে বলেন, ৩০ জানুয়ারি বিকাল চারটার দিকে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেনীর এক পাহাড়ি ছাত্রীকে এক বাঙালি ছাত্র ইভটিজিং করে। ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্রটির ঐ ছাত্রের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে স্কুলের অধ্যক্ষ নুরুল হাকিমের কাছে ছাত্রীটি অভিযোগ করতে যায়। কিন্তু অধ্যক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
উল্টো বাঙালি ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহসভাপতি মাঈনুদ্দীনের নেতৃত্বে একদল বহিরাগত ক্লাসরুমে গিয়ে সাধারণ পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের হুমকি ধামকি দেয় এবং স্কুল এন্ড কলেজের গেট থেকে বাহির হলেই হামলা করা হবে বলে শাসিয়ে আসে। পরে কাউন্সিলর মাসুম ও মাঈনুদ্দীন বহিরাগত বাঙালিরা উত্তেজিত করে কলেজের সাধারণ পাহাড়ি ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। এতে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রায় ৮/১০ জন আহত হয়।
অপর দিকে খাগড়াছড়িতে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম বলেন, দুপুরে ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডেকে এনে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।