গোলাগুলির বিকট শব্দে সীমান্ত এলাকা উত্তপ্ত, সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ

fec-image

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সে দেশের বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি (এএ) এর সাথে আবারো ব্যাপক সংর্ঘষে জড়িয়েছে মিয়ানমার আর্মি ও বিজিপি পুলিশ।

রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ও সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুদিন সীমান্ত শান্ত থাকার পর মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আবারো ব্যাপক গোলাগুলির কারণে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে সীমান্ত এলাকা।

সীমান্ত পাড়ের বাসিন্দারা জানায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন সীমান্তের ওপারের মিয়ানমার অভ্যন্তরে তাদের বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি (এএ) এর সাথে সেই দেশের সেনাবাহিনী ও বিজিপির গত এক মাস ধরে সংর্ঘষ চলে আসছে। এই সংর্ঘষে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ তাদের প্রায় ২০ জন সদস্য নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী স্থল পথে হামলার পাশাপাশি হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধ বিমান থেকেও গোলা ছুঁড়ে। হেলিকপ্টার ও যুদ্ধ বিমান থেকে ছোঁড়া গুলি গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৬টি ভারী গোলা আঘাত হানে। তবে গোলা গুলো বিষ্ফোরিতো না হওয়ায় বাংলাদেশের কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি।

এ ঘটনায় মিয়ানমার রাষ্ট্র দূতকে দুই দফা তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারো নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ফাত্রাঝিরি, রেজু, আমতলী ও বাইশফাঁড়ি বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু, বুচিদং, ওয়ালি দং ও রাচিদং অঞ্চল অভ্যন্তরে আবারো লড়াই শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় সীমান্ত পাড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কিছুক্ষণ পর পর ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। থেমে থেমে ভারী গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে সীমান্ত এলাকা। আকাশ পথে হেলিকপ্টার মহড়া দিয়েছে মিয়ানমার।

এতে রক্তে রঞ্জিত হয়েছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো। নিরাপত্তার কারণে সীমান্তের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছে।সীমান্ত এলাকার পাহাড়গুলো থেকে গাছ, বাঁশ, লাকড়ি সংগ্রহকারী দিনমজুরেরা এখন সেখানে যেতে পারছেনা।

এদিকে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় নিরাপত্তার কারণে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী।

সীমান্ত পাড়ে বসবাসরত বাংলাদেশিরা জানান, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের এরুপ আগ্রাসী মনোভাব আচরণ অব্যাহত থাকলে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে।

অপরদিকে সীমান্তে আবারো উত্তেজনা দেখা দেয়ায় অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়ন করে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)

সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাশন ব্যাটালিয়ন ২০ ( ইসিবির) অধিনায়ক লে কর্নেল সৈয়দ রিয়াসত আজিম জানিয়েছেন সীমান্ত উত্তেজনার কারণে গত ১৫ দিন যাবৎ সীমান্ত সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়কটির নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস জানিয়েছেন, সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থায় জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনকে সীমান্ত এলাকায় চলাচলের উপর সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: গোলাগুলি, নির্মাণ, সড়ক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন