সীমান্ত চৌকি দখল নিতে

মিয়ানমারের বিদ্রোহী দু’গ্রপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, কেপেঁ উঠলো সীমান্ত

fec-image

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে এবার বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরএসও ও আরসার মধ্যে সীমান্ত চৌকি দখল নিয়ে সংঘর্ষ-গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।।

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টানা কয়েক হাজার রাউন্ড গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন স্থানীয়রা।

এ সব গোলাগুলি শব্দে রীতিমতো কেপেঁ উঠেছিলো তুমব্রু চাকমা পাড়া ও বাইশফাঁড়িসহ আশপাশের গ্রাম।

তুমব্রু ও বাইশফাঁড়ি সীমান্তে বসবাসরত আবু ছৈয়দ ও রিপন চাকমা বলেন, সীমান্তের ৩৫/৩৬ নম্বর পিলার তথা হাতির ঝিরি ও মক্কুরটিলা এলাকায় ওপার থেকে
হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ শুনতে পায় তারা। যা টানা পৌঁনে ১ ঘণ্টাব্যাপী চলে। এরই মধ্যে ভারী অস্ত্র ও মাঝারী অস্ত্রের হাজার হাজার গোলার আওয়াজ তারা শুনেন। যাতে তাদের এলাকা কেঁপে উঠে থরথর করে।

অপর একাধিক সূত্র দাবি করেন, এ সীমান্তে ১টি মিয়ানমার সরকারের সীমান্ত চৌকি সরকারি ও বিদ্রোহী বাহিনীর কারো নিয়ন্ত্রণ ছিলো না। চৌকিটি মাঝখানে আরকান দখল করে নেয় কয়েক মাস আগে। আজকাল তারা এটি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে যায়। এ চৌকি’টি সরকারি দল আবারো দখলে নিতে তাদের সমর্থিত আরসা সশস্ত্র গোষ্ঠিকে লেলিয়ে দেয়।

অপর দিকে অবস্থান হারা আরএসও (আরকান সলিডারিটি অর্গনাইজেশন) তাদের সীমান্তে আস্তানা গাড়তে এ চৌকিটি তাদের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে ২ দিন ধরে। যার শেষ পরিণতি ঘটে শুক্রবার সকাল ১২ টার দিকে। এ নিয়ে পৌঁনে ১ ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির পর মিয়ানমার সেনা সমর্থিত আরসা সশস্ত্র গোষ্ঠি ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে পাল্টা হামলা করলে আরএসও পিছু হটে। এর পরপর চৌকিটি সেনারা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এখন এ নিয়ে সেখানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. শফিকের সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, হঠাৎ করে প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজে প্রকম্পিত হয়ে ঐ সীমান্ত এলাকার মাটি। তার ধারণা হয়তো মিয়ামারের ভিতরে সে দেশের সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ওই সংঘর্ষের ব্যবহৃত গুলাগুলির শব্দ তমব্রুর সীমান্ত এলাকাতে এসে পৌঁছেছে।

তমব্রু বাজার এলাকার ব‍্যবসায়ী মো. সরোয়ার বলেন, প্রচণ্ড গোলাগুলি যখন শুরু হয় তখন ছিল জুমার নামাজের সময়, নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় উক্ত গোলাগুলির আওয়াজ শুনেছেন তিনি। তার মতে কম করে হলেও ৫ থেকে ৬ হাজার রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ১৯ ডিসেম্ভর ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় জনসাধারণকে না যাওয়ার জন‍্য মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু এ সীমান্তে জীবন-জীবিকার তাগিদে সে নিষেধাজ্ঞা মনছে না। অথচ সীমান্তে প্রচণ্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: গোলাগুলি, মিয়ানমার, সীমান্ত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন